তিনি মারা গিয়েছিলেন ভীষণ ঠাণ্ডার সময়ে। সে বছর লন্ডন শহরে দেড়’শ বছরে সবচেয়ে ভয়ংকর শীত নেমেছে।এত শীত যে পানির পাইপের ভিতরে পানি জমে বরফ হয়ে গিয়েছিলো। সেই শীতকালে বাড়িতে গ্যাস আভেনের ভিতরে মাথা ঢুকিয়ে দিয়ে যন্ত্রণায় দুমড়ে মুচড়ে গিয়েছিলেন তিনি-কবি সিলভিয়া প্লাথ। আর এই ঘটনার কয়েকদিন আগে ১৯৬৩ সালের ১৪ জানুয়ারী প্রকাশিত হয়েছিলো ভিক্টোরিয়া লুকাস ছদ্মনামে লেখা তাঁর একমাত্র উপন্যাস ‘দ্য বেল জার’।
এ বছর ‘বেল জার’ উপন্যাসটি প্রকাশনার ৫৯ বছরে পা রাখলো। ১৯৬৩ সালে এই উপন্যাস প্রকাশিত হলেও আমেরিকায় এটি প্রকাশ পায় ১৯৭১ সালে। কিন্তু তার আগেই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে, বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ হয়ে বেস্ট সেলার বইয়ের তালিকায় নাম লিখিয়ে ফেলেছে ‘বেল জার’।
সিলভিয়া প্লাথের জন্ম ১৯৩২ সালে আমেরিকার ম্যাসাচুসেটসের সমুদ্রশহর উইনথ্রপে। আট বছর বয়স থেকে কবিতা লিখতে শুরু করেন। ১৯৫০ সালে প্রথম ‘সেভেনটিন’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিলো তার ছোটগল্প। কবিতা লেখার পাশাপাশি গল্পও লিখতেন তিনি। ১৯৬০ সালে কন্যা ফ্রিডার জন্ম। সে-বছরই প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘দ্য কলোসাস’। ওই সময়েই তিনি লিখতে শুরু করেন কুড়ি বছর বয়সী কলেজে পড়ুয়া একটি মেয়ের স্নায়ুবিপর্যয় নিয়ে উপন্যাস ‘দ্য বেল জার’।
ডাক্তারের প্রেসক্রিপশনে বারংবার লেখা হচ্ছিলো অ্যান্টি-ডিপ্রেসেন্ট ওষুধের নাম। কিন্তু আমেরিকার ওষুধটা ইংল্যান্ডে ভিন্ন নামে, ভিন্ন উপাদানে তৈরি ছিলো। ফলে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ঘটছিলো সিলভিয়া প্লাথের শরীরে। সেই ঢাল বেয়ে গড়িয়ে যাওয়া সময়ে বিবিসিতে একটা চাকরির ব্যবস্থাও হয়েছিলো। খোঁজ চলছিলো বাচ্চাদের নিয়ে একটা ফ্ল্যাটে মাথা গোঁজার ফাইয়ের। ডাক্তার চাইছিলেন তাঁকে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে পাঠাতে। কিন্তু তার আগেই ১১ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৩ সালে আত্মহনন করলেন সিলভিয়া। দু’বার প্রত্যাখ্যাত তাঁর উপন্যাস ‘দ্য বেলজার’ প্রকাশিত হবার উনিশ দিনের মাথায়।
মৃত্যুর আগে শেষ কবিতায় সিলভিয়া একটি লাইন লিখেছিলেন;
We have come so far, it is over.
প্রাণের বাংলা ডেস্ক
তথ্যসূত্রঃ ঘুমের দরজা ঠেলে, লিটারেরি হাব
ছবিঃ গুগল