তেইশ.
প্রায় সাড়ে-তিন দশক আগে বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের বাংলা বিভাগে প্রযোজক-উপস্থাপকের পদে যোগ দেওয়ার পর ঐ প্রতিষ্ঠানে কাজ করার অভিজ্ঞতার উপরে কিঞ্চিৎ আলোকপাত আগেই করেছি। তখন লিখেছিলাম যে কাজ শুরু করার কিছু দিন পর থেকে বেশ কয়েক বছর ধরে আমি ‘ইংলিশ বাই রেডিও’ বা বেতার সম্প্রচারের মাধ্যমে ইংরেজি ভাষা শিক্ষার অনুষ্ঠানটির নিয়মিত উপস্থাপনা করেছি। সাপ্তাহিক এই অনুষ্ঠানটি বিবিসি’র বাংলা অনুষ্ঠানের শ্রোতাদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলো। পরবর্তীকালে অবশ্য কর্তৃপক্ষের তরফে এটার সম্প্রচার বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, জানি না কী কারণে।
আমি বাংলা বিভাগে যোগ দেওয়ার সময়ে ‘ইংলিশ বাই রেডিও’ অনুষ্ঠানটির উপস্থাপক ছিলেন বাংলাদেশের একটি সুপরিচিত বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক, যিনি বছর চারেক আগে বিবিসি বাংলা বিভাগে যোগ দেন। সে যাই হোক, বছরখানেক পরে একদিন আমাদের বিভাগীয় প্রধান পিটার ম্যানগোল্ড আমাকে ডেকে জানতে চাইলেন ইংরেজি শিক্ষাদানের অনুষ্ঠানটির উপস্থাপনা করায় আমি আগ্রহী হবো কি না। আমি ঐ অধ্যাপকের নাম করে বললাম, ‘উনি তো এটার দায়িত্বে রয়েছেন।’ উত্তরে পিটার জানালেন যে বিবিসি’র সঙ্গে তাঁর চুক্তিভিত্তিক কাজের মেয়াদ শেষ হওয়ার মুখে, অচিরেই তিনি বিবিসি ত্যাগ করবেন, তাই অনুষ্ঠানের দায়িত্ব এখন অন্য কারো হাতে তুলে দেওয়া দরকার। ঐ সময়ে বাংলা বিভাগসহ অন্যান্য বিভাগেও প্রযোজক তথা উপস্থাপকদের নিয়োগ হতো নিদিষ্ট চুক্তির ভিত্তিতে, ক্ষেত্রবিশেষে তার মেয়াদ বাড়ানো হতো। সংবাদ পাঠ এবং অন্যান্য ধরনের নিয়মিত সম্প্রচার ছাড়াও বিশেষ অনুষ্ঠান উপস্থাপন-পরিবেশনের দায়িত্ব যাদের উপরে থাকতো তাদের কারো মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার সময় হলে বদলি কারো উপরে ঐ দায়িত্ব ন্যস্ত হতো। ইংরেজি শিক্ষাদানের অনুষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্ব আমাকে দেওয়ার জন্য পিটারের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ার কোন কারণ আমার ছিলো না। ইংরেজি ভাষার চর্চা বরাবরই আমার একটি অত্যন্ত প্রিয় বিষয় এবং বিদেশে আসার আগে দেশে থাকতে আমার অন্যতম কাজও ছিলো ইংরেজি ভাষা পঠন-পাঠনসংক্রান্ত। সুতরাং পিটারের প্রস্তাবে আমি সোৎসাহে রাজি হয়ে গেলাম। পরের কয়েক দিনে আমার ঐ সহকর্মীর সঙ্গে আলোচনা করে আমি জেনে নিলাম ইংরেজি ভাষা শেখানোর বিষয়টিকে বেতার সম্প্রচারের উপযোগী রূপদানের জন্য এযাবৎ কী ধরনের মালমশলা তিনি ব্যবহার করে এসেছেন এবং কীভাবে, অর্থাৎ কী ভঙ্গীতে, অনুষ্ঠান পরিবেশন করেছেন। তাঁর বদলি হিসাবে অনুষ্ঠান পরিচালনা করায় আমার তেমন কোন অসুবিধা হবে বলে মনে হলো না।
‘ইংলিশ বাই রেডিও’ অনুষ্ঠানটির সম্প্রচার হতো বাংলা ছাড়াও আরো বেশ কয়েকটি, প্রধানত এশিয়ান, ভাষায়। আসলে এটার মূল প্রযোজক ছিলো ‘বিবিসি ইংলিশ’ নামে বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসেরই অন্য আরেকটি বিভাগ। আমি যখন বাংলা বিভাগের হয়ে অনুষ্ঠান পরিবেশনা শুরু করি তখন বিবিসি ইংলিশ-এর তরফে প্রযোজনার দায়িত্বে ছিলেন স্যু ককীল নামে একজন মহিলা, তাঁর সহযোগী ছিলেন আরো তিনচারজন। এঁদের সকলের সঙ্গেই আমার ঘনিষ্ঠতা জন্মে গেলো অল্প কিছু দিনের মধ্যেই। অনুষ্ঠানের ‘ফরম্যাট’ ছিলো ছোট ছোট গল্প বা নাটকের আদলে, ‘স্ক্রিপ্ট’ লেখা হতো ইংরেজি ভাষায় (যে কাজটা করতো বিবিসি ইংলিশ), আমার কাজ ছিলো ঐ স্ক্রিপ্ট বাংলা ভাষায় রূপান্তরিত করে পরিবেশন করা। অন্যান্য যেসব ভাষাতে বিবিসি’র অনুষ্ঠান সম্প্রচারিত হতো তাদের ক্ষেত্রেও এমনটাই ছিলো করণীয়। এই ধরনের সমস্ত অনুষ্ঠানই হতো ‘প্রি-রেকর্ডেড’, অর্থাৎ স্টুডিওতে আগে রেকর্ড করে নিয়ে তারপর সম্প্রচারের সময় সেই রেকর্ডিং বাজানো, ‘লাইভ’ বা অনুষ্ঠান চলাকালীন মাইক্রোফোনের সামনে সরাসরি, তাৎক্ষণিকভাবে পাঠ নয়। রেকর্ডিং-এ অংশ নিতেন উপস্থাপক ছাড়াও বিবিসি ইংলিশ-এর প্রতিনিধিরা, স্ক্রিপ্ট অনুযায়ী এক-একজন এক-একটা ভূমিকায় কণ্ঠদান করে। আমাদের বিভাগীয় প্রধান পিটার আমাকে বলেছিলেন, আমার পূর্বসুরী এত দিন ধরে যেভাবে বা যে ভঙ্গীতে অনুষ্ঠান পরিবেশন করে এসেছেন আমাকেও সেটাই অনুসরণ করতে হবে তেমনটা নয়। আমার নিজস্ব পছন্দমতো আমি নিজের ‘স্টাইল’ বেছে নিতে পারি। স্যু ককীল এবং অন্যান্যরাও তাই বললেন: ‘বিবিসি ইংলিশ-এর তৈরী করা স্ক্রিপ্ট একটা থাকবে, সেটাকে নিজস্ব ভঙ্গীতে পরিবেশন করার জন্য ঘষেমেজে, একটু-আধটু রদবদল করে নিতে পারবে তুমি।’ তাছাড়া এটাও তো সত্যি যে একটা ভাষায়, যেমন ইংরেজিতে, রচিত মূল স্ক্রিপ্ট অন্য ভাষায়, যেমন বাংলায়, রূপান্তরিত করলে স্বাভাবিকভাবেই তার চরিত্রগত পরিবর্তন কিছুটা করতেই হবে শ্রোতাদের কাছে সেটা গ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য। সেজন্য বিবিসি ইংলিশ-এর স্ক্রিপ্ট হাতে পাওয়ার পর আমি নিজের মতো করে সেটা সাজিয়ে নিতাম। রেকর্ডিং-এ কণ্ঠদানকারী অন্যদের তাতে কোন আপত্তি হয়নি। বেতারানুষ্ঠানের মাধ্যমে ইংরেজি ভাষা শিক্ষার এই আসর পরিচালনা ও উপস্থাপনা আমি খুবই উপভোগ করেছি। শ্রোতারাও এটা যথেষ্ট পছন্দ করতেন, যার প্রমাণ তাঁদের কাছ থেকে নিয়মিত বিবিসি’র ঠিকানায় আসা বেশ কিছু চিঠি যেগুলিতে তাঁদের পরিতৃপ্তি প্রতিফলিত হতো। এই প্রসঙ্গে একটা ঘটনার বিবরণ দিই। বিবিসি ইংলিশ-এর তরফে একবার স্থির করা হলো যে এই অনুষ্ঠানটিকে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ দুই বাংলারই শ্রোতৃবর্গের কাছে আরো প্রিয়, আরো আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য বিশেষভাবে সংগঠিত কিছু কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। এই উদ্দেশ্যে একটি শিক্ষামূলক দ্বিভাষিক পুস্তক রচনার এবং তার সাথে সহায়ক ‘অডিও ক্যাসেট্’ তৈরীর উদ্যোগ নেওয়া হলো। ইংরেজি বইটিতে সন্নিবেশিত পাঠগুলির বাংলা সংস্করণ রচনার দায়িত্ব স্বাভাবিকভাবে আমার উপরেই বর্তালো। বইটির পাশাপাশি তার বিষয়বস্তুর ভিত্তিতে ছোট ছোট নাটকের মতো কথোপকথন রেকর্ড করে অডিও ক্যাসেট্ তৈরীর ব্যবস্থা হলো। তারপর বিবিসি ইংলিশ আর বাংলা বিভাগের যৌথ উদ্যোগে পশ্চিমবঙ্গে আর বাংলাদেশে প্রচার কর্মসূচি সংগঠিত হলো। স্থির হলো যে বিবিসি ইংলিশ-এর তরফে স্যু ককীল আর বাংলা বিভাগের তরফে আমি কলকাতায় এবং ঢাকায় যাবো যেখানে আনুষ্ঠানিকভাবে বই এবং অডিও ক্যাসেট্ প্রকাশ ও বিতরণ করা হবে। বইটির নাম ছিলো টাইগার’স্ আই (Tiger’s Eye) যার বিষয়বস্তু ইংরেজি পঠনপাঠনের ভিত্তিতে রচিত একটি গল্পের দ্বিভাষিক নাট্যরূপ, তার সঙ্গে পাঠ্যপুস্তকের নোটবইতে যেমন থাকে তেমন শব্দার্থ, ভাষা সংকেত, প্রশ্নোত্তর, অনুশীলনী ইত্যাদি। অডিও ক্যাসেট্-এর বিষয়বস্তুও তাই, কথ্য ইংরেজি ভাষা ব্যবহারের চর্চার সহায়ক উপকরণ, ইংরেজির সাথে সাথে বাংলাতেও। বই ও ক্যাসেট্ উভয়ের রচনাতেই আমার সক্রিয় ভূমিকা ছিলো বলাই বাহুল্য।
টাইগার’স্ আই বইটির মুদ্রন ও প্রকাশনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিলো কলকাতার অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটী প্রেস-কে। সে সময়ে ঐ প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার ছিলেন নীল ও’ব্রায়েন। কলকাতায় তখন বার্ষিক বইমেলা চলছিলো এবং মেলা প্রাঙ্গনেই আনুষ্ঠানিকভাবে বইটির প্রকাশনার ব্যবস্থা হয়। সহায়ক অডিও ক্যাসেট্ অবশ্য লন্ডন থেকেই তৈরী করে আনা হয়েছিলো, এগুলিও বইয়ের সঙ্গেই প্রকাশ করা হয়। এর তিনচারদিন আগেই স্যু ককীল আর আমি কলকাতায় চলে এসেছিলাম, আমাদের থাকার ব্যবস্থা হয়েছিলো কেনিলওয়ার্থ হোটেলে। নীল ও’ব্রায়েন-এর সুদক্ষ পরিচালনায় প্রকাশনা অনুষ্ঠান খুবই চমৎকারভাবে সম্পন্ন হয়েছিলো কলকাতার প্রায় সবক’টি সংবাদপত্রের এবং দূরদর্শনের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে। সংবাদমাধ্যমে এই অনুষ্ঠানের খবর বেশ গুরুত্ব দিয়েই প্রচারিত হয়েছিলো। ঐ সন্ধ্যায় ‘ইংলিশ বাই রেডিও’ অনুষ্ঠানের অনুরাগী শ্রোতাদের সংখ্যাও ছিলো চোখে পড়ার মতো। পরদিন সকালে আমাদের হোটেলেই একটা অনানুষ্ঠানিক মধ্যাহ্নভোজের আয়োজনে যোগ দিয়েছিলেন বেশ কয়েকজন সাংবাদিক ও অন্যান্য আমন্ত্রিতরা। আমার ও ঊর্মির পুরনো বন্ধু দীপংকর চক্রবর্তীও (এক সময়ে ওয়াশিংটন-এ ‘ভয়েস অভ্ অ্যামেরিকা’র সঙ্গে যুক্ত), যিনি তখন আনন্দবাজার পত্রিকায় কর্মরত, সেখানে ছিলেন। সাংবাদিকদের মধ্যে কয়েকজন ‘ইংলিশ বাই রেডিও’ অনুষ্ঠানটি সম্পর্কে আমাকে নানা ধরনের প্রশ্ন করলেন। পঁচিশ-তিরিশ মিনিটের এই প্রশ্নোত্তর পর্ব চলেছিলো ইংরেজিতে এবং অনুষ্ঠানের প্রযোজক হওয়ার সুবাদে স্যু ককীলও এতে সামিল হলেন। তাঁর বক্তব্যে স্যু আমার সম্পর্কে যে উক্তি করেছিলেন তা এখনও আমার মনে আছে। তিনি বললেন: ‘আমি এবং বিবিসি ইংলিশ-এর অন্যান্যরা অত্যন্ত খুসী যে বাংলা বিভাগের তরফে এই অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করার ভার যাঁকে দেওয়া হয়েছে তিনি এই দায়িত্ব পালন করার জন্য যোগ্যতম ব্যক্তি। আমার স্বীকার করতে দ্বিধা নেই যে ইংরেজি আমার মাতৃভাষা হওয়া সত্ত্বেও এই ভাষাটির উপর সাগরের দখল আমার নিজের চাইতে বেশি।’ কথাটা শুনে আমি নিজে তো অবশ্যই কিঞ্চিৎ আত্মপ্রসাদ লাভ করেছিলাম, আমাদের বন্ধু দীপংকরও পরে একাধিকবার বলেছেন যে এই কথায় তাঁরও বেশ গর্ববোধ হয়েছিলো। তবে নিজের ঢাক এর চেয়ে বেশি পেটানো সমীচীন হবে না।
এর দু’দিন পর স্যু আর আমি ঢাকা চলে গেলাম টাইগার’স্ আই প্রকাশনা অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্ব উপলক্ষে, উঠেছিলাম শেরাটন হোটেলে। ঢাকার প্রকাশনা অনুষ্ঠান পরিচালনা করেছিলেন শ্রদ্ধেয় (প্রয়াত) অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে যোগাযোগ, সাক্ষাৎকার ইত্যাদি সংগঠিত হয়েছিলো বিবিসি’র বিশেষ প্রতিনিধি প্রবীণ সাংবাদিক আতাউস সামাদের উদ্যোগে। বাংলাদেশে বিবিসি’র ব্যাপক জনপ্রিয়তা, সেই মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকেই। ‘ইংলিশ বাই রেডিও’ বেতারানুষ্ঠানের অনুরাগী শ্রোতাদের সংখ্যাও প্রচুর, পশ্চিমবঙ্গের তুলনায় অনেক বেশি। সেজন্য টাইগার’স্ আই প্রকাশনার ব্যাপারে সাধারণ মানুষরা, বিশেষ করে ছাত্রছাত্রীরা, খুবই উৎসাহী ছিলেন। রেডিওতে ইংরেজি শিক্ষার আসর পরিচালনার সুবাদে আমার নিজের নামও তখন বহু লোকের কাছে পরিচিত, অনেকেই আমার সঙ্গে আলাপ করতে, মত বিনিময় করতে আগ্রহী। কথা বললামও অনেকের সঙ্গেই, আলাপচারিতা খুবই উপভোগ করলাম। এই প্রসঙ্গে একটি মজার ঘটনার উল্লেখ করছি। ঢাকার অনুষ্ঠানের এক দিন পর স্যু লন্ডনে ফিরে গেলেন। আমি থেকে গেলাম আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব সাহচর্যে ক’টা দিন কাটানোর উদ্দেশ্যে। দিন সাতেক পর কলকাতা ফিরছি। বিমানে পাশের আসনের সহযাত্রীর সঙ্গে টুকিটাকি কথা হচ্ছিলো। তিনি মন্তব্য করলেন, ‘আপনার কথা শুনে তো মনে হয় আপনি কলকাতারই লোক।’ বললাম, ‘ঠিকই ধরেছেন। তবে আপাতত বিদেশের বাসিন্দা।’ ‘ও, আচ্ছা, আমিও ঢাকা ছেড়ে বিদেশবাসী। তা কোথায় থাকেন এখন?’ ‘লন্ডনে।’ ‘তাই? আমি সিঙ্গাপুরে। ব্যবসা আছে ওখানে। তা লন্ডনে কী করেন? ‘বিবিসি-তে আছি। বাংলা বিভাগে।’ ‘বিবিসি বাংলা? বাঃ বাঃ! আমি মাহ্বুব আলম। আপনার নামটা জানতে পারি?’ ‘আমার নাম সাগর চৌধুরী।’ নাম শুনে ভদ্রলোক যেন সামান্য চমকে উঠলেন মনে হলো Ñ ‘সাগর চৌধুরী? বলেন কী! আপনাকে তো চিনি আমি। ইংলিশ বাই রেডিও প্রোগ্রামটা আপনিই তো প্রেজেন্ট করেন। আমার দুই ছেলেমেয়ে তো আপনার প্রোগ্রামের মহা ফ্যান! একটা সপ্তাহও মিস্ করে না।’ ‘জেনে খুব ভালো লাগলো। তবে প্রোগ্রামটার বেশ কিছু অংশ তো বাংলায়। ছেলেমেয়ে বাংলা বোঝে?’ ‘পড়তে বা লিখতে ভালো পারে না, তবে বোঝে। বাংলা বলতেও পারে। আপনার প্রোগ্রাম ফলো করে ওদের কিন্তু যথেষ্ট হেল্প হয়, বলতেই হবে।’ ‘নতুন প্রোগ্রামটাও শুনতে বলবেন Ñ টাইগার’স্ আই Ñ যেটা লঞ্চ করতেই ঢাকায় এসেছিলাম।’ ‘অবশ্যই, অবশ্যই। আপনার সাথে দেখা হওয়ার কথাও বলবো ওদের। দারুণ এক্সাইটেড হবে।’ আমার পরিবেশিত অনুষ্ঠানের এমন একনিষ্ঠ কিশোর-কিশোরী শ্রোতাদের সন্ধান পাওয়ার চাইতে বেশি পরিতোষের বিষয় আমার জন্য আর কী হতে পারতো?
ছবি: গুগল