পোস্টবক্স। ফেইসবুকের একটি জনপ্রিয় গ্রুপ। এবার প্রাণের বাংলার সঙ্গে তারা গাঁটছড়া বাঁধলেন। প্রাণের বাংলার নিয়মিত বিভাগের সঙ্গে এখন থাকছে পোস্টবক্স-এর রকমারী বিভাগ। আপনারা লেখা পাঠান পোস্টবক্স-এ। ওখান থেকেই বাছাইকৃত লেখা নিয়েই হচ্ছে আমাদের এই আয়োজন। আপনারা আমাদের সঙ্গে আছেন। থাকুন পোস্টবক্স-এর সঙ্গেও।

ঈহিতা জলিল
ক্লাসের সবাই একত্র হয়েছে। আজ নীরার জন্মদিন। সবাই কিছু না কিছু উপহার এনেছে। সব উপহারের মধ্যে সুমির আনা রূপোর ব্রেসলেটটি নিয়ে মেয়েদের মধ্যে তুমুল উত্তেজনা।সবাই হাতে পরে পরে দেখছে। কিন্তু কারো হাতেই সেটি সুন্দর মতো বসছে না। হঠাৎ কুমু বললো, “দেখিতো আমি পরি”। আর সবাই হই হই করে উঠলো, দেখ দেখ কুমুটার হাতে কি সুন্দর মানিয়েছে!!
দূর থেকে কেউ একজন যে মনোযোগ দিয়ে সবটা খেয়াল করছিলো এটা কুমুদের কারো নজরে পরেনি। পরদিন সবার মাঝ থেকে আস্তে করে কুমুকে ডেকে নিলো সুহৃদ।
এই কুমু শোনো!
লাজুক হেসে কুমু বললো, কি?
সুহৃদ একটা প্যাকেট দিয়ে বললো, এটা তোমার জন্য! অবাক হয়ে কুমু বললো, কি এটা!?
সুহৃদকে চুপ থাকতে দেখে ও প্যাকেটটা খুললো। দেখলো ওতে একটা ধূসর পুঁতির ব্রেসলেট আর একটা নীল টিপের বাক্স।
জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে কুমু তাকালো সুহৃদ এর দিকে!! তারচেয়েও গভীর দৃষ্টিতে কুমুর দিকে তাকিয়ে সুহৃদ বললো,
“যেদিন টাকা হবে সেদিন অমন রূপোরটা কিনে দিবো।
আপাতত পুঁতিরটাই থাক”। লজ্জা আর খুশীতে কুমু সেদিন আর কোন কথাই বলতে পারেনি।
সেই ব্রেসলেট কুমু কখনো পরেনি। যদি ছিঁড়ে যায়। প্রতিদিন একবার করে বের করে করে দেখতো। আর যে কথাগুলো সুহৃদকে বলতে পারতো না তার সব বলতো। এমনি একদিন কুমুর হাত থেকেই ব্রেসলেটটা ছিঁড়ে গেলো আর ওর বুকের ভিতরটা ধক্ করে উঠলো। অজানা আশংকায় সে কুঁকড়ে গেলো। তারপর ভাবলো ধুর কি সব আবোলতাবোল ভাবছে!! একটা ব্রেসলেটই তো ছিঁড়েছে আর তো কিছু না!!
কুমুর আজ অনেক ব্রেসলেট। শুধু সেই রূপোর ব্রেসলেটটি-ই আর পরা হলো না। কি করা যাবে!! কিনে দেবার মানুষটি-ই যে নেই। কিংবা কে জানে হয়তো মানুষটি রূপোর ব্রেসলেট ঠিকই কিনেছে শুধু পরার হাতটি বদলে গেছে!!
ছবি: গুগল