নিষিদ্ধ যতো বই আর সিনেমা

ইরাজ আহমেদ

সাহিত্য সম্পাদক, ঢাকা থেকে

প্রকাশ: 13 Dec 2018

2175 বার পড়া হয়েছে

Shoes

নিষেধ মানেই সীমাহীন কৌতুহলের উঁকিঝুকি।   যেখানেই ধরা যাবে না- ছোঁয়া যাবে না বললেই মনে হয় ছুঁয়ে দেখি আরো বেশি করে। পৃথিবীতে বহু জিনিস এবং বিষয় নিষিদ্ধ করা গেলেও মানুষের মনকে বাঁধতে পেরেছে এমন শক্তি কোথাও নেই। পৃথিবীতে কত কী নিষিদ্ধ! বই থেকে শুরু করে সিনেমা, সিনেমা থেকে মতবাদ। আবার নিষিদ্ধ রাজনীতিও। যুগে যুগে রাষ্ট্রযন্ত্র, ধর্মগোষ্ঠী আর সমাজ নিষিদ্ধ করেছে এ-সব বিষয়। অনেক সময় মানুষের মুক্ত সাংস্কতিক চর্চার ওপর, চিন্তার ওপর আঘাত হানার জন্যই নিষেধের কাটাতার বেঁধে দেয়া হয়েছে। আবার কখনো সমাজের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর মঙ্গলের জন্যই নৈতিকতার প্রশ্নে উড়িয়ে দেয়া হয়েছে নিষেধের লাল পতাকা। এ নিয়ে বিস্তর বিতর্ক আছে। স্বাধীন চিন্তা আর ব্যক্তির নিজস্ব বিবেচনার ওপর চাপিয়ে দেয়া এই নিষেধ মেনে নিতে চায়নি মানুষ। তাই উঠেছে প্রতিবাদ, চলেছে তর্ক। শেষে বন্ধ দুয়ার আর বন্ধ করে রাখা সম্ভব হয়নি।
এবার প্রাণের বাংলার প্রচ্ছদ আয়োজনে সেইসব নিষিদ্ধ বই আর সিনেমা।     

নিষিদ্ধ বই নতুন কোন বিষয় নয়। পৃথিবীর সাহিত্যের ইতিহাসে অশ্লীলতার অভিযোগ থেকে শুরু করে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের কারণে বহু মহান গ্রন্থ নিষিদ্ধ হয়েছে। নির্যাতিত হয়েছেন বইয়ের লেখক। যুগের পর যুগ ধরে বই নিয়ে চলেছে তর্ক-বিতর্ক।মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই বইগুলো-ই পরে ধ্রুপদী সাহিত্যের মর্যাদা পেয়েছে।
আমাদের বাংলা ভাষায় রচিত সাহিত্যেও এরকম কাণ্ড ঘটেছে। একসময়ে কথা সাহিত্যিক সমরেশ বসুর লেখা ‘প্রজাপতি’ বইটি অশ্লীলতার দায়ে আদালতে ওঠে। এই বইটির প্রকাশনা বন্ধ রাখার জন্য মামলা চলেছিলো বহুদিন ধরে। শেষ পর্যন্ত ১৮ বছর পর ‘প্রজাপতি’ আবার ডানা মেলেছে। ১৯৮৫ সালে পশ্চিম বাংলার সুপ্রীম কোর্ট এই উপন্যানটিকে অশ্লীলতার দায় থেকে মুক্তি দেয়। এই মামলার প্রাথমিক রায়ে অবশ্য বইটি নিষিদ্ধ হয়েছিলো। ঔপন্যাসিক সমরেশ বসুকে আদালত ২০১ টাকা জরিমানাও করেছিলো। বাংলাদেশেও সদ্য প্রয়াত সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের লেখা উপন্যাস ‘খেলারাম খেলে যা’ ব্যাপক বিতর্ক তৈরী করেছিলো।
বাংলাদেশের দু’জন লেখক লেখালেখির বিতর্কে জড়িয়ে দেশ থেকে নির্বাসিতও হয়েছেন। এরা হচ্ছেন কবি দাউদ হায়দার ও কবি ও কথাশিল্পী তসলিমা নাসরিন।

কবি দাউদ হায়দার কবিতা লিখে ধর্মীয় গোষ্ঠীর রোষের শিকার হয়েছিলেন। তসলিমাও তাই।
চিন্তা আর তত্ত্বের বাহন বই। যুগে যুগে মানুষের চিন্তা,ইতিহাসের আগ্রযাত্রা, সমাজের বিকাশ স্থান পেয়েছে বইতে। মানুষের উঠে দাঁড়ানোর কাহিনি লেখা হয়েছে বইতে। আগুনে পুড়িয়ে, নিষেধের দেয়াল তুলে চিন্তার মুক্ত জানালাকে বন্ধ করা সম্ভব হয়নি।
ফ্যানি হিলের লেখা ‘মেমোরিজ অফ এ ওমেন অফ প্লেজার’ বইটি প্রথম মুদ্রিত হয় ১৭৪৮ সালে। বলা হয়ে থাকে ইংরেজি ভাষায় লেখা এই বইটি যৌনতা ছড়ানোর দায়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বহুবার নিষিদ্ধ হয়। আমেরিকায় ১৯৬৬ সালের আগ পর্যন্ত এই বইটির প্রকাশনা ছিল নিষিদ্ধ। আমেরিকায় ১৯৬৬ সালের আগ পর্যন্ত এই বইটির প্রকাশনা ছিল নিষিদ্ধ।
জার্মান দুই দার্শনিক কার্ল মার্কস ও ফ্রেডারিখ অ্যাঙ্গেলসের লেখা ‘দি কমিউনিস্ট ম্যানিফেস্টো’ বইটির বিরুদ্ধে প্রধান আপত্তি উত্থাপক সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলো। কারণ তারা মনে করতেন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কমিউনিস্ট রাজনীতির উত্থানের পেছনে মূল শক্তি জুগিয়েছে এই বই। ধনতন্ত্রের আগ্রাসী রূপ, ধনতন্ত্রের সংকট প্রথম এই বইতেই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়া হলো। পৃথিবীর দেশে দেশে ধনতন্ত্রের বিরুদ্ধে শুরু হলো সমালোচনা, বিদ্রোহ। সূচনা হলো সর্বহারা শ্রমিক শ্রেণীর অধিকার আদায়ের সংগ্রাম।আর তখনই এই বইয়ের উপর নেমে এলো নিষেধাজ্ঞার খড়গ।
‘অ্যাডভেঞ্চার্স অফ হাকেলবেরি ফিনস’ মার্ক টোয়েনের এক অনন্য সৃষ্টি। শৈশবে এই উপন্যাস পড়েনি এমন পাঠক খুব কম আছে। ১৮৮৫ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়েই বইটি বিতর্কের কবলে পড়ে। এরপর নানা সময়ে এই অনবদ্য শিশুতোষ উপন্যাসটি সমালোচিত হয়। এক সময়ে দাস শব্দটি ব্যবহারের জন্য হাকেলবারি ফিন উপন্যাসের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় ওঠে। সমালোচকরা বলেন, এই উপন্যাসটি শিশুদের মনের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। অনেক স্কুলের পাঠ্যসূচী থেকেও হাকেলবারি ফিন উপন্যাসটি বাদ দেয়ার জন্য সুপারিশ করা হয়।
সর্বশেষ ২০০৯ সালে আমেরিকায় এই উপন্যাসের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়। মামলা চলাকালে অনেকে উপন্যাসটির পক্ষে দাঁড়িয়ে বলেন, বইটি থেকে কোন ধরণের শব্দ বাদ দেয়া এক ধরণের সেন্সরশীপ আরোপ করা। হাকেলবারি ফিন একটি সময়ে নির্যাতনমূলক সমাজব্যবস্থার ছবি তুলে ধরেছে।
আলেকজান্ডার নভোকভের লেখা ‘লোলিটা’ উপন্যাস তো যেন এক জ্বলন্ত অগ্নিপিণ্ড। এই বই নিয়ে আজও আলোচনা-সমালোচনার শেষ নেই। শুরুতেই এই উপন্যাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল আশ্লীলতা আর ধর্ষণের।পাঠক-সমালোচকদের গালগাল আর সমালোচনায় কান পাতা দায়।চারদিকে রব উঠলো, নভোকভ যৌনতাকে একটি পণ্য করে তুলেছেন তাঁর লেখায়। ‘লোলিটা’ উপন্যাসের মূল কাহিনিই হচ্ছে এক কিশোরীর সঙ্গে বয়ষ্ক এক মানুষের প্রেম। ১৯৫৫ সালে প্রথম ইংল্যান্ডে উপন্যাসটি প্রকাশিত হয়। প্রকাশের পরেই ‘লোলিটা’ ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সে নিষিদ্ধ হয়ে যায়। ১৯৫৮ সালের আগে মার্কিন মুল্লুকে এই উপন্যাসটি প্রকাশিতই হতে পারেনি। উপন্যাসটি বই আকারে প্রকাশিত হওয়ার পর, লন্ডন থেকে প্রকাশিত পত্রিকা ‘এক্সপ্রেস’-এ জন গর্ডন নামে এক সমালোচক লিখেছিলেন, ‘আমার পাঠ করা উপন্যাসের মধ্যে লোলিটা হচ্ছে জঘন্যতম এক লেখা। উপন্যাসটিকে পর্নগ্রাফি বললে ভুল করা হবে না।’

এখন কিন্তু সেই দৃশ্যপট আর নেই। ‘লোলিটা’ উপন্যাসটি এখন মর্ডান লাইব্রেরীর তালিকায় ইংরেজি ভাষায় লেখা মহৎ উপন্যাসের বিচারে চতুর্থ স্থান অধিকার করে আছে।

অমর ইংরেজ কথাশিল্পী জেমস জয়েসের অনন্য সৃষ্টি ‘ইউলিসিস’। এমন এক সময়ে এই উপন্যাসটি প্রকাশিত হয়েছিলো যখন পৃথিবীতে শিল্পের গলা টিপে ধরতো নিষেধাজ্ঞা।সমালোচনার বেড়ায় বিক্ষত হতেন লেখক। জয়েসের এই অসাধারণ উপন্যাসটিও একই ভাগ্য বরণ করে। বিভিন্ন পত্রিকায় এই উপন্যাসের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় ওঠে। পরিণতিতে ১৯৩০ সাল পর্যন্ত ইংল্যান্ডে ‘ইউলিসিস’ উপন্যাস ছিল নিষিদ্ধ। ১৯২০ সালে আমেরিকায় এই বইয়ের বিরুদ্ধে মামলা ওঠে আদালতে। মূল অভিযোগ ছিলো বইতে লেখক হস্তমৈথুনে বিষয়ে খোলামেলা লিখেছেন।তখন আমেরিকার বহু পোস্ট অফিসে ইংল্যান্ড থেকে আসা এই বইটি পুড়িয়ে ফেলার খবরও পত্রিকায় ছাপা হয়। অনেকদিন মামলাটি চলার পর ১৯৩৩ সালে আমেরিকার কোর্ট রায় দেয় বইটি মূলত যৌনতা বিষয়ক নয়। তাই এর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হলো। বিখ্যাত কবি টি এস এলিয়ট ‘ইউলিসিস’ সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন এভাবে, ‘এই বইটি গুরুত্বপূর্ণ।এই বইয়ের প্রতি আমরা ঋণী। মানব মনের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিক্রিয়াকে এখানে স্থান দেয়া হয়েছে যা থেকে আমরা কেউ পালিয়ে যেতে পারবো না।

বাড়ির মালকিনের সঙ্গে বাগানের মালির গভীর প্রণয়-এই হচ্ছে বৃটিশ লেখক ডি এইচ লরেন্সের সমালোচিত উপন্যাস ‘লেডি চ্যাটার্লিজ লাভার’-এর মূল উপজীব্য। সমালোচকদের অভিযোগের আঙুল বইতে খোলামেলা ভাবে অবাধ যৌনতা, নারীর শরীর আর সঙ্গম দৃশ্যের দিকে।এই উপন্যাস একসময় প্রকাশ্যে পাঠ করাও ছিলো অপরাধ।
এই বই লিখে লরেন্সকে অনেকবার আদালতের মুখোমুখি হতে হয়েছে। সহ্য করতে হয়েছে সমালোচনা। লরেন্স তাঁর এই অনন্য উপন্যাসে শরীর সর্বস্ব শূণ্যতায় মোড়া প্রেমের কাহিনিই পাঠকদের শোনাতে চেয়েছিলেন।

পাঠক হয়তো চমকে উঠবেন এই সমালোচিত ও নিষিদ্ধ গ্রন্থের তালিকায় ‘হ্যারি পটার’-এর নাম দেখে। কিন্তু জে. কে রাউলিংসের লেখা এই রূপকথাধর্মী ধারাবাহিক উপন্যাস সিরিজও যথেষ্ট সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছে। ডাইনি তত্ত্বের প্রচারণা করছে হ্যারি পটার এই অভিযোগে পৃথিবীর অনেক দেশে এই সিরিজের বইগুলো পুড়িয়েও ফেলা হয়েছে। নিষেধের বেড়াজাল বহু দেশে হ্যারি পটারকে তাড়া করে ফিরেছে।কিন্তু তাতে করে হ্যারি পটারের জয়যাত্রা রুখে দেয়া যায়নি।

বইয়ের পাশাপাশি নিষেধের কাটাতার বিভিন্ন সময়ে ক্ষত-বিক্ষত করেছে সিনেমাকেও। রাজনৈতিক মতবাদ, যৌনতা আর ভায়োলেন্স প্রদর্শনের অভিযোগে বন্ধ হয়েছে সিনেমা। চলচ্চিত্রের ইতিহাস ঘেটে দেখা গেছে খ্যাতনামা অনেক পরিচালকদের সিনেমা বিভিন্ন দেশে বছরের পর বছর নিষিদ্ধ ছিল। বাংলাদেশে বেশকিছু সিনেমা নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠলেও নিষিদ্ধ হওয়ার মতো ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু প্রতিবেশী দেশ ভারতে কিন্তু এ ধরণের দৃষ্টান্ত অনেক রয়েছে। কখনো রাষ্ট্রযন্ত্র সরাসরি কখনো মাধ্যম সেন্সরবোর্ড। কাঁচি চলেছে নির্মমভাবে। সিনেমার দর্শকরা নিশ্চয়ই ভুলে যাননি ‘আঁধি ‘ অথবা ‘ব্যান্ডিট কুইন’ সিনেমার কথা। সত্তরের দশকে ইন্দিরা গান্ধী প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে জরুরী আইনের বলে নিষিদ্ধ করা হয় ‘আাঁধি’।অভিযোগ ছিলো, সিনেমায় স্বয়ং ইন্দিরা গান্ধীর রাজনৈতিক চরিত্রকে পর্দায় নিয়ে আসা হয়েছে।
‘ব্যান্ডিট কুইন’ সিনেমার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিলো, নোংরা, কুরুচীপূর্ণ সংলাপ এবং অবাধ যৌনতা প্রদর্শন। ভারতীয় সেন্সরবোর্ড বিষয়গুলো ঠিক হজম করতে পারেনি। পরিচালক অথচ ভারতে রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে যাওয়া চম্বলের নারী দস্যু ফুলন দেবীর ওপর ঘটে যাওয়া নির্মম অত্যাচার, হিন্দু ধর্মের জাত প্রথার ভয়াবহতা আর তার প্রেক্ষিতে ফুলনের দস্যু হওয়ার সত্য কাহিনি নিয়ে পরিচালক শেখর কাপুর এই ছবি বানিয়েছিলেন।
দীপা মেহেতার তৈরী সিনেমা ‘ফায়ার’ এক সময়ে সারা পৃধিবীতে আলোড়ন তুলেছিলো। তিনি পুরস্কিৃতও হয়েছিলেন। কিন্তু তার নিজের দেশে ছবিটি নিষিদ্ধ করে সেন্সরবোর্ড। ভারতের মৌলবাদী রাজনৈতিক দল শিবসেনা এই সিনেমার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। ছবির মূল অভিনেত্রী শাবানা আজমীকে মেরে ফেলার হুমকীও দেয়া হয়। হিন্দু সমাজে দুই ননদের সমকামী সম্পর্ক নিয়ে তৈরী হয়েছিল সিনেমার গল্প। কিন্তু ছবিটির বেলায় ঘটলো রাজনৈতিক বদহজম।

মীরা নায়ারের ছবি ‘কামসূত্র’ একসময় সেন্সরবোর্ডের ঘুম হারাম করে দিয়েছিলো। যৌনতার অভিযোগ তুলে নিষিদ্ধ করা হয়েছিলো ছবিটি।
ভারতে এরকম আরও বেশকিছু সিনেমা বিভিন্ন সময়ে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

ভারতে সম্প্রতি ভারতে পরিচালক সঞ্জয়লীলা বনশালীর ছবি ‘পদ্মাবতী’ নিয়েও বিতর্কের ঝড় বয়ে গেছে। ভারতীয় মৌলবাদী দল শিবসেনা এই সিনেমা হলে প্রদর্শনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে এবং ছবির পরিচালক ও নায়িকার নাক কেটে নেয়ার হুমকী দেয়।
পৃথিবী বিখ্যাত পরিচালক আইজেনস্টাইনের তৈরী ছবি ‘ব্যাটলশিপ পটেমকিন’ দীর্ঘ সময় ধরে ফ্রান্স, জার্মানি, ফিনল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া ও স্পেনে নিষিদ্ধ ছিলো। সমাজতান্ত্রিক মতবাদ ছড়ানো ও জারতন্ত্রের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ সূচনার কাহিনি তুলে ধরাতেই যত বিপত্তি বাধে। ১৯৫৮ সালে ইংল্যান্ডে এই সিনেমাটিকে ‘এক্স’ মার্কা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
আরেক খ্যাতিমান পরিচালক স্ট্যানলি কুবরিকের সিনেমা ‘ক্লক ওয়ার্ক অরেঞ্জ’ ইংল্যান্ডে ২৭ বছর ধরে নিষিদ্ধ ছিলো মারামারি আর পাশবিক ধর্ষণ দৃশ্য দেখানোর অভিযোগে। উল্টোদিকে আমেরিকায় ছবিটি ব্যাপক সাড়া ফেলে।
১৯৭৩ সালে তৈরী হয় আরেক সমালোচিত সিনেমা ‘লাস্ট ট্যাঙ্গো ইন প্যারিস’। অভিনেতা  ছিলেন মার্লন ব্রান্ডো।  শারীরীক মিলনের সময় মাখন ব্যবহার করায় ইতালি ও স্পেনে ছবিটির প্রদর্শন নিষিদ্ধ হয়। তাদের বক্তব্য ছিল খাদ্যবস্তু সঙ্গমের সময়ে এভাবে ব্যবহার করাটা শোভন নয়।

এই ছবিতে অবাধে যৌনতা ব্যবহারের অভিযোগ তোলা হয়। অথচ এখন বিশ্বের দশটি সেরা ছবির তালিকায় স্থান পাচ্ছে ‘লাস্ট ট্যাঙ্গো ইন প্যারিস’।
১৯৮০ সালে তৈরী সিনেমা ‘ক্যানিবল হলোকাস্ট’ নৃসংসতার অভিযোগে এখনও বিশ্বের ৪০টি দেশে নিষিদ্ধ। এই সিনেমায় গণহত্যা, ধর্ষন বিষয়গুলোকে খুবই মোটা দাগে ব্যবহার করা হয়েছে।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের নির্মমতার কাহিনি নিয়ে জার্মান কথাশিল্পী এরিখ মারিয়া রেমার্কের উপন্যাস ‘অল কোয়ায়েট ইন দা ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট’ অবলম্বনে সিনেমা তৈরী হয় ১৯৩০ সালে। হিটলার এই ছবিটি নিষিদ্ধ করে দেয়। বারো বছর জার্মানি ও অষ্ট্রিয়ায় এই সিনেমা নিষিদ্ধ ছিলো।

ছবিঃ গুগল

 

মন্তব্য করুন

Share Article

আরো পড়ুন

আরো পড়ুন

স্বত্ব © ২০১৬ - ২০২৩ প্রাণের বাংলা।

সম্পাদক ও প্রকাশক: আবিদা নাসরীন কলি।

Email: Article: [email protected], Avertising: [email protected]

Phone: +8801818189677, +8801717256199