কিশোর দা, যেখানেই থাকেন ভালো থাকেন

কনকচাঁপা

কণ্ঠশিল্পী ও লেখক, ঢাকা থেকে

প্রকাশ: 7 Jul 2022

2660 বার পড়া হয়েছে

Shoes

শিল্পী কনকচাঁপা এবার গানের পাশাপাশি প্রাণের বাংলার পাতায় নিয়মিত লিখছেন তার জীবনের কথা। কাটাঘুড়ির মতো কিছুটা আনমনা সেসব কথা, হয়তো কিছুটা অভিমানিও। কিছুটা রৌদ্রের মতো, খানিকটা উজ্জ্বল হাসির মতো।

বাংলাদেশের কয় কোটি মানুষ এন্ড্রুকিশোরে ডুবে আছেন সেই হিসাব আমি জানিনা তবে বাংলাদেশের আকাশ বাতাস অর্থাৎ অক্সিজেন এন্ড্রুকিশোরে ভরা।জোরে দম নিয়ে দেখুন উনার গলিত সোনার প্রবাহের সুরেলা সুবাস পেয়ে যাবেন নিশ্চয়ই! আজ দু’বছর হয়ে গেলো উনি নেই অথচ এখনই মিডিয়া, সাংবাদিক অনেকেই ভুলে গেছে! কেউ হয়তো দায়সারাভাবে তাঁকে স্মরণ করেছে।কিন্তু এটাই কি তাঁর প্রাপ্য! তবে এর একটা ভালো দিক আছে।সেটা হলো বাংলাদেশের মানুষ ইদানীং অথবা অনেক আগে থেকেই নেগেটিভ ব্যাপার নেগেটিভ শিল্পী নেগেটিভ ভিডিও নেগেটিভ গল্প নেগেটিভ ছবি নিয়ে ব্যস্ত।

তাদের চতুর্দিকে একটা নেগেটিভ ইথারের আনাগোনা। তো কিশোর’দার জীবনে গান তো বটেই চালচলনেও নেগেটিভ কিছু ছিলো না।সেহেতু তাঁকে অল্প অল্প ভুলে যাওয়ার লক্ষনটা তে বোঝা যায় উনার উপস্থিতির পজিটিভিটি।গান গেয়ে বাংলাদেশের পুরো কয়েক যুগের কয়েক প্রজন্মকে তিনি সুকুমার বৃত্তির চর্চার মাধ্যমে সুপথে টেনেছেন। কয়েক যুগ যুবসম্প্রদায়কে গানে বুঁদ করে রেখেছেন তো বটেই আর তাঁর আশপাশের লোকজনকেও তিনি সবসময় আশা ভরসা নানারকম সমাধান দিয়ে মানুষের মনে প্রশান্তি দিয়ে যাওয়ার কাজ করেছেন কোন রকম পাওয়ার হিসাব ছাড়াই। কিশোর’দা খুবই রঙ্গিন কাপড় পরতে পছন্দ করতেন। মাঝেমধ্যে তা অতিরিক্ত রঙিন হয়ে যেতো। সে দিকে দৃষ্টি দিলে তিনি বলতেন আরে অমুককে বলেছিলাম, সে- ই বানিয়ে দিলো অথবা এনে দিলো।বোঝা যেতো তাঁর ব্যক্তি ফ্যাশন স্টেটমেন্ট নিয়ে কাজ করার সময় ও ছিলো না মন ও ছিলো না।শুধু বুঝতেনই শিল্পীদের একটু রঙ্গিন থাকতে হয়।দাড়ি গোঁফ রঙ করতে হতো বলে খুবই বিরক্ত ছিলেন।

মাঝেমধ্যেই বলতেন রঙ করা বাদ দিবো কি বলো কনক? বলতাম বাদ দেন,পরক্ষণেই বলতেন ধ্যার,তাইলে মানুষ কি ভাববে! ভাববে কিশোর বুড়ো হয়েছে। বুড়ো হতে তাঁর খুব অনিচ্ছা, ভয় ছিলো। তাই বুঝি এই বয়সেই স্রষ্টা চলাফেরা করার অবস্থাতেই নিয়ে গেলেন। মৃত্যুর শেষ মুহুর্তে তিনি ভিডিও ক্লীপ এ সবার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন! কি মনের জোর! বাঘের শক্তিতে গান গাইতেন আমাদের যে এন্ড্রুকিশোর তিনি দেহেও বাঘই ছিলেন, অথচ কিনা কর্কট এর কাছে হার মানলেন! না,হার মানেন নি।মাথা উঁচু করেই চলে গেছেন গন্তব্যে! কিশোর দা -- গন্তব্যে যেতে কি অনেক দূর হাঁটতে হয়? সে পথে কি আলো আছে? যেতে যেতে নিশ্চয়ই গাচ্ছিলেন ডাক দিয়েছেন দয়াল আমারে!

ছবি:লেখকের ফেইসবুথেকে ও গুগল

মন্তব্য করুন

Share Article

আরো পড়ুন

আরো পড়ুন

স্বত্ব © ২০১৬ - ২০২৩ প্রাণের বাংলা।

সম্পাদক ও প্রকাশক: আবিদা নাসরীন কলি।

Email: Article: [email protected], Avertising: [email protected]

Phone: +8801818189677, +8801717256199