ভারতের ডুয়ার্সে বার্ডিং…

প্রাণের বাংলা ডেস্ক

এডমিন ডেস্ক, ঢাকা থেকে

প্রকাশ: 20 Apr 2023

4165 বার পড়া হয়েছে

Shoes
আনসার উদ্দিন খান পাঠান
আনসার উদ্দিন খান পাঠান

পশ্চিম বাংলায় অনুষ্ঠিত 'নর্থ বেঙ্গল তৃতীয় বার্ড ফেষ্টিভ্যালে ' আমন্ত্রিত হয়ে সেখানে গিয়েছিলাম গতমাসে। ভারতের বিভিন্ন রাজ্য ছাড়াও বাংলাদেশ,নেপাল আর ভুটানের বার্ড ফটোগ্রাফার, পাখিপ্রেমী , পরিবেশকর্মী , ট্যুর অপারেটর, পরিবেশ সংরক্ষণ বিষয়ক এনজিও ও এতে অংশ নেয়। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ট্যুরিজম বিভাগ আর ডুয়ার্স অঞ্চল কেন্দ্রিক ট্যুরিজম উন্নয়ন নিয়ে কাজ করা Association on Conservation and Tourism এসিটি নামক একটি স্বনামধন্য এন জি ও এই বার্ড ফেষ্টিভ্যালের মূল আয়োজক। হিমালয়ের পাদদেশে অনন্য সুন্দর বৈচিত্র্যময় ঘন বৃক্ষরাজি , বিস্তৃত চাবাগান, উঁচুনীচু পাহাড়, খরস্রোতা পাথুরে সর্পিল নদী আর ঝরণা , নানা বরণ পাখি আর বন্যপ্রাণী , চোখ ধাঁধানো স্থানীয় লোকাচার ডুয়ার্স নামে পরিচিত এই বিস্তৃত অঞ্চলে পর্যটকদের হাতছানি দেয়। কিছুটা সুগম আর বাকিটা দুর্গম এই অভিনব পাহাড়ি বনে কয়েকদিনের হাইকিং,ট্রেকিং,রাত্রিযাপন আর বেশকিছু নতুন পাখ-পাখালির ছবি তোলার সুযোগ হলো আমার। সে এক অনন্য অভিজ্ঞতা।

আয়োজকদের মূল উদ্দেশ্য ডুয়ার্সের নানান প্রজাতির পাখির স্পটকে আরো পরিচিত করে তোলা, এই অঞ্চলে পাখি-দর্শন পর্যটনকে আরও জনপ্রিয় করা , পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় স্থানীয় অধিবাসী এবং পর্যটকদের সচেতন করা , পর্যটনে প্রাপ্ত আয়ে স্থানীয় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের চলমান প্রয়াসকে আরও জোরালো করা।

সারা বিশ্বে এখন ইকো ট্যুরিজম বেশ সমাদৃত। পরিবেশকে অক্ষত রেখে , যথাসম্ভব কম হট্টগোল আর কম মনুষ্যনিসৃত আবর্জনা তৈরি করে পর্যটনের ভিন্ন স্বাদ নেয়া , স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে তাদের পৈত্রিক পেশার পাশাপাশি পর্যটনকর্মে সম্পৃক্ত করা , তাদের পরিবেশ ও প্রকৃতি ধংশকারী কর্মকান্ড নিবারণ করে স্বতপ্রনোদিত পরিবেশকর্মী হিসেবে গড়ে তোলা ইকোটুরিজমের উল্লেখযোগ্য দিক। এর বেশ সফল এক প্রয়োগ এই সফরে দেখে মুগ্ধ হয়েছি।

মি রাজ বসু

এই যাত্রায় আরও মুগ্ধ হয়েছি মি: রাজ বসু নামের এক প্রাজ্ঞ, ত্যাগী , পরিশ্রমী এবং ডুয়ার্সে অত্যন্ত সুপরিচিত ব্যক্তির সঙ্গে পরিচিত হয়ে এবং ফাকে ফাঁকে তার সঙ্গে মতবিনিময় করে। তিনি ভারতে ' ‘ট্যুরিজম গান্ধী ' হিসেবে সম্মানিত। ডুয়ার্স ছাড়াও তিনি , সিকিম , ভুটান এবং নর্থ ইষ্টের অন্যান্য রাজ্যেও পর্যটন নিয়ে নিরলস পরিশ্রম করছেন। পর্যটন নিয়ে মতবিনিময় এবং নানান সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে বাংলাদেশেও এসেছেন বেশ কয়েকবার। শিলিগুড়িতে থাকেন তিনি। শিলিগুড়ি ছাড়াও, জলপাইগুড়ি ,আলিপুর দুয়ার , দার্জিলিং আর আসামের অংশবিশেষ নিয়ে বিস্তৃত ডুয়ার্স অঞ্চলের দূর্গম সম্ভবনাময় ট্যুরিস্ট স্পট সনাক্ত করা, তার প্রচার, পর্যটকদের নানান সুবিধাদি তৈরি করা, স্থানীয়দের সংগঠিত করা, নানাবিধ উৎসব আয়োজনের মাধ্যমে পর্যটকদের আমন্ত্রণ জানানোর মত কষ্টসাধ্য কাজ তিনি করে যাচ্ছেন অম্লান বদনে। এরই মাঝে তার প্রয়াস এজটা আন্দোলনে রূপ নিয়েছে এবং দেশবিদেশে অনেকের নজর কেড়েছে।

মি: বসু প্রত্যন্ত পাহাড়ি গ্রামে সশরীরে ঘুরে তরুণদের ইকো ট্যুরিজম , বণ্যপ্রাণী দর্শন, বনদর্শন, বার্ডিং, রুরাল ট্যুরিজম, স্থানীয় আকর্ষনের ইতিহাস, পর্যটকদের আবাস , খাদ্য পরিবেশন , বিনোদন , স্থানীয় জনগোষ্টির সংস্কৃতি , ট্যুরিষ্ট গাইড হিসেবে দায়িত্ব পালন, পরিবহন , পাহাড়ি পায়ে চলা পথে পর্যটন সহায়ক পোর্টারের কাজ করা, নেটওয়ার্কিং ইত্যাদি বিষয়ে স্থানীয় তরুণ তরুণীদের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। এলাকাভিত্তিক উৎসাহী ও যোগ্যদের নিয়ে কমিটি করে দিয়েছেন। যোগাযোগের জন্য প্রতিনিধি ঠিক করেছেন। সরকারি ট্যুরিজম বিভাগ ও বনবিভাগের সঙ্গে নানান উদ্যোগের সমন্বয়ে স্থানীয়দের সরাসরি সম্পৃক্ত করেছেন।

এ ব্যাপারে তিনি সবচে' বড় যে কাজটি করেছেন তা হলো প্রত্যেক স্পটে অসংখ্য 'হোম স্টে ' তৈরি করেছেন। স্থানীয় অধিবাসীরাই তাদের থাকার ঘরের একটি বা দু'টি কক্ষ বা আলাদা করে ট্যুরিষ্টদের থাকার মত ঘর তৈরি করেছেন। হোটেলের পরিবর্তে অতিথিরা সেখানেই থাকবে। ট্যুরিষ্টরা গৃহকর্তার তৈরি করা খাবার খাবে। সে ঘরের বা প্রতিবেশীদের প্রশিক্ষিত কেউ গাইড হিসেবে কাজ করবে। উঠানেই আয়োজন করা হবে গ্রামের ছেলেমেয়েদের নিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অতিথিদের মনোরঞ্জনের জন্য। মি: বসুর মতে এতে করে কম খরচে ট্যুরিষ্টরা যেমন ভ্রমণ সারতে পারবেন তেমনি ব্যয় করা অর্থ সরাসরি স্থানীয়দের হাতে যাবে।

ইতোমধ্যে ভারতের এ অংশে এবং এর বাইরে আরও কিছু অঞ্চলে এসিটি-র ছত্রছায়ায় প্রায় তিন হাজার 'হোম স্টে' তৈরি হয়েছে।

আমাদের দেশে পাখি আর প্রকৃতিপ্রেমীদের কয়েকটি গন্তব্য হচ্ছে টাংগুয়া, পদ্মার চর, সাতছড়ি, লাউয়াছড়া, রেমা কালেংগা, মৌলভীবাজার জেলার কয়েকটি বিল আর পাহাড়ী এলাকা এবং সুন্দরবন। স্থানীয়ভাবে এসব এলাকায় থাকার তেমন ব্যবস্থা নেই, কাছাকাছি শহরের হোটেলে গিয়ে উঠতে হয়। ডুয়ার্সের মত এমন হোম স্টে-র ব্যবস্থা এখানেও করা যায়। প্রশিক্ষিত গাইড হিসেবে কাজ করার জন্য স্থানীয় তরুণদের থেকেই প্রশিক্ষণ দেয়া যায়। চা বাগানের বাংলো বা কাছাকাছি হোটেলে থেকেই চা বাগান দেখতে হয়। চা শ্রমিক পাড়াতেও দুয়েকখানা ঘর এমনি হোম স্টেয়ের আওতায় আনা যায়।

ইকো ট্যুরিজম আর হোম স্টে আন্দোলনের সফল সংগঠক রাজ বসু শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে বসে কাজ করেন না, শিলিগুড়িতে তার মূল আবাস হলেও অধিকাংশ দিনগুলোই কাটে তার পাহাড়ে, জঙ্গলে, নদীতে , প্রত্যন্ত গ্রামে। মিশে যান প্রান্তিক মানুষের সঙ্গে।একই খাবার খান, একই দাওয়ায় রাত কাটান, তাদের সুখদুখের কথা শুনেন। 'অতিথি দেবতাতুল্য' এই ভারতীয় লোকাচারের প্রাচীন মর্মবাণী তিনি পর্যটন জনপদের মানুষের কানে কানে পৌঁছে দিচ্ছেন। পুরো ডুয়ার্সে তাঁর জয়গান।

রাজ’দা শীত গ্রীষ্মে পাহাড়ে জঙ্গলে নগরে চপ্পল পড়ে থাকেন। চিলাপাতা ফরেষ্টে ভূটান থেকে নেমে আসা তোরসা নদীর পাড়ে হাঁটতে হাঁটতে কারণ জিজ্ঞেস করেছিলাম। উত্তরে বললেন, একবার চেষ্টা করেছিলেন ডুয়ার্সের পাহাড়ি পোর্টারদের সবাইকে অসমতল আর পাথুরে পথে চলার উপযোগী শক্ত জুতা কিনে দিতে। চেষ্টা তদবির করেও সকলকে দেয়ার মত জুতার সংস্থান তিনি করতে পারেননি।সিদ্ধান্ত নিলেন যতদিন সকল বোঝাবাহক কুলিকে জুতা দিতে পারবেন না ততদিন তিনি কখনো কোন অবস্থাতেই সাহেবী জুতা পড়বেন না। পোর্টারদের মত চপ্পলই পড়বেন। ইকো ট্যুরিজম ,রুরাল ট্যুরিজম ইত্যাদি বিষয়ে সেমিনারে বক্তৃতা করতে তিনি প্রায়ই দেশের বাইরে যান, সেখানেও তাঁর চপ্পল জোড়াই ভরসা। সিংগাপুরে একবার সেমিনারস্থলে চপ্পল পড়ে তাঁকে ঢুকতে দিচ্ছিলো না প্রহরীরা , তিনি ফিরে আসতে চাইছিলেন, পরে আয়োজকরা এসে সাদরে গেট থেকে নিয়ে যান।সে অভিজ্ঞতা তিনি বললেন হাসতে হাসতে।

তৃতীয় নর্থ বেঙ্গল বার্ড ফেষ্টিভ্যালে অতিথিরা মিলিত হয় পশ্চিম বঙ্গ সরকারের ট্যুরিজম বিভাগ পরিচালিত শিলিগুড়ির মৈনাক হোটেলে। পরিচিতি, মতবিনিময় , সেমিনার ইত্যাদি শেষ করে পরদিন যাত্রা তিস্তা ব্যারাজের উজানে সৃষ্ট বিপুল জলরাশির আধার গজলডোবায়।ব্যারেজের অন্যপাশে ভাটিতে শুকনো তিস্তা যা আরও শুকনো হয়ে ভাটিতে ঢুকেছে বাংলাদেশে। ব্যারেজের উজানের পানি এই শুকনো মৌসুমেও কুলুকুলু শব্দে বিশালাকায় খাল বেয়ে যাচ্ছে নানান গন্তব্যে। উত্তর বঙ্গের বিস্তৃত এলাকায় সে জলে চলছে সেচ। আর ওপাড়ে ভাটির বাংলাদেশের তিস্তাপাড়ের কৃষকের কপালে হাত।

ভারতীয় বার্ড ফটোগ্রাফারদের অন্যতম তীর্থ এটি। শীত মৌসুমে হিমালয় পেরিয়ে অসংখ্য উত্তুরে পাখি আসে এখানে অতিথি হয়ে। শীত প্রায় শেষ , অতিথি পাখিদের অনেকেই বিদায় নিয়েছে কাছের হিমালয় পেরিয়ে আরও উত্তরে , তবু এখনো এই মার্চে কিছু যাই যাই করে রয়ে গেছে।তারই ছবি নিলাম ব্যারেজ সংলগ্ন জলে নৌকায় ঘুরে ঘুরে।

সেখান থেকে গরুমারা ফরেষ্টের চিলাপাতা এরিয়ায়। ময়ূর, হাতি, বাইসন , গন্ডারসহ অসংখ্য বণ্যপ্রাণীর আবাস এই চিলাপাতা ফরেষ্ট। মতবিনিময় আর ভুড়িভোজ হল গ্রামের লোকজন আর ট্যুরিজম বিষয়ে স্থানীয় স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে।

দু'দিন থেকে তারপর যাত্রা পাহাড় বেয়ে উত্তরের ভূটান সীমান্তের লেপচাকা গ্রামে। পায়ে হেঁটে দীর্ঘ পাহাড়ি পথে চলা। পাহাড়চূড়ায় দৃষ্টিনন্দন গ্রাম লেপচাকা। সেই গ্রামে অসংখ্য রং বেরঙের পাখি দেখা হলো, ছবি তোলা হলো। প্রায় সব পাখিই আমার জীবনে প্রথম দেখা। দু:খ হলো, একসময় এসব পাহাড় জঙ্গল বৃহত্তর বাংলারই অংশ ছিলো। ভূটান রাজার সঙ্গে যুদ্ধ করে এই অঞ্চলের মালিক হন একসময় কোচবিহারের রাজা। এখন সে এক ভিন্ন দেশ। চেপচাকাতে তিন দিনের অবস্থানে পাহাড়ি পথে দিনমান হেঁটেছি, খাড়াপথ বেয়ে উঠেছি অনেক উপরে, নেমেছি আবার। মায়াময় বনপথের সে কী মোহময় লাবণ্য।

লেপচাকার হোম স্টে থেকে যাত্রা করে তাসিগাও হয়ে রবার্স পয়েন্ট পর্যন্ত গেছি , সে অনেক উপরে। পথে পথে রাজদা লতাগুল্ম চেনালেন। কোন গাছের পাতা শুকিয়ে বারুদ হয়, কোন পাতার রস খেলে শক্তি বাড়ে, কোনটায় মাথা ব্যথা সারে, সর্দি সারে, কোনটা খেয়ে মানুষ নেশা করে, সব তার জানা। তিনি বললেন, এই অঞ্চল ছিল চীনগামী সিল্করোড এবং চট্টগ্রাম হয়ে বাইরের দুনিয়ায় যাবার ক্রসরোড। এই অঞ্চলসহ বৃহত্তর বাংলাই ছিল প্রাচীনকালে ধান,চাল আর গৃহপালিত মুরগীর প্রধান উৎপাদন আর সরবরাহ কেন্দ্র। পরে যোগ হলো চা। তিনি জানালেন বৃটিশরা প্রথম এই উপমহাদেশে চা এনেছেন তা ঠিক নয়। ইংরেজরা সে ব্যবসা শুরুর আগেই শিলিগুড়িতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দাদা প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর আর রামচন্দ্র নামে এক ব্যবসায়ীর চা বাগান ছিলো।

লেপচাকার উঁচু নীল পাহাড় থেকে নামার পথে আমরা থামি বক্সা টাইগার রিজার্ভ ফরেস্টের বক্সা ফোর্টে। ব্রিটিশরা বিল্পবীদের ধরে ধরে এই দূর্গম ফোর্টে বন্দি রাখতো।১৯৭১ এ বাংলাদেশের উদবাস্তুদের একটা অংশ এখানে থেকেছেন। এরপর বনপথ ধরে হেঁটে হেঁটে আরও খানিক সমতলের গ্রাম জয়ন্তীতে।

সেখান থেকে শেষ গন্তব্য ছিল গরুমারার রাজাভাতখাওয়া। কোচবিহারের মহারাজাকে যুদ্ধে পরাজিত করে তাকে ধরে নিয়ে যায় ভূটানের রাজা। পরে কোচবিহারের রাজপরিবার সাহায্য চায় ইংরেজদের। ইংরেজ সৈন্যরা এগিয়ে আসে এবং ভূটানের অধীনস্থ এই বিস্তৃত এলাকা দখল করে নেয়। ইংরেজদের পক্ষে রংপুরের জেলা ম্যজিষ্ট্রেট কোচবিহারের রাজাকে মুক্তি দিতে বলে নয়তো ভুটানের রাজধানী দখলের হুমকি দেয়। অগত্যা সন্ধির পরে কোচবিহারের রাজাকে মুক্তি দেয়। মুক্তি পেয়ে রাজা এইস্থানে এসে দীর্ঘদিন পর অন্নগ্রহণ করেন। রাজা এখানে বসে ভাত খান ,তাই এর নাম হয় রাজাভাতখাওয়া। জায়গাটি বর্তমানে পড়েছে নবগঠিত আলিপুর দুয়ার জেলায়। ভূটানের এই অঞ্চল পরে ভারতের অংশ হয়।এখনো সেখানে ভুটানী ভাষা এবং সংস্কৃতি বিদ্যমান।

রাজাভাতখাওয়া থেকে চাগান আর ঘন অরণ্য ধরে ট্রেনে করে শিলিগুড়ি ফেরা। সেখান থেকে বিদায়। এরই ফাঁকে একদিন গেলাম দার্জিলিং নিজস্ব ব্যবস্থাপনায়, অপার সৌন্দর্যের পাহাড়ের ভাজে দেখা পেলাম আরও কয়েকটি মনভুলানো পাখির।পুরো ট্যুরে রাজদার যোগ্য শিষ্য মি: ওশান লেপচা আমাদের সার্বক্ষণিক দেখভাল করেছেন, রাজদার সঙ্গে সঙ্গে কৃতজ্ঞতা তাঁর প্রতিও। আমার সার্বক্ষণিক সঙ্গী বার্ডার নাইমুল হাসান , তাঁর উপস্থিতি আমাকে এই কষ্টসাধ্য কিন্তু স্মরণীয় ভ্রমণে শক্তি যুগিয়েছে।

ডুয়ার্সের এই অংশে ( একসময়কার অবিভক্ত বাংলা) হাতির পাল, ময়ূরের আনাগোনা, নীল গাইয়ের বিচরণ দেখে মনে পড়লো এই প্রাণীগুলো বাংলাদেশ থেকে ক্রমে বিলীন হয়ে গেল। ৪০ বছর আগেও মধুপুর বনে ময়ূর ছিল।আজ শুন্য।

ডুয়ার্স পাখির অভয়ারণ্য। তাদের বাঁচিয়ে রাখা ,তাদের বিচরণ নিরাপদ ও অবাধ করার সরকারি চেষ্টার পাশাপাশি বেসরকারী নানান সংস্থা , স্থানীয় অধিবাসী ও স্বেচ্ছাসেবকদের প্রচেষ্টা আনন্দের উদ্রেক করে। বন পাহাড় বেষ্টিত পাখপাখালির শান্তিময় অখ্যাত গ্রামগুলোও যে সম্মিলিত চেষ্টায় পর্যটনের এক আকর্ষণীয় ক্ষেত্র হতে পারে , প্রত্যন্ত ডুয়ার্সে তারই প্রমাণ পেলাম।

বাঁচুক প্রকৃতি, বাঁচুক বন পাহাড় , বাঁচুক বণ্যপ্রাণী। আনন্দময় হোক জীবন।

ছবিঃ লেখক ।

মন্তব্য করুন

Share Article

আরো পড়ুন

আরো পড়ুন

স্বত্ব © ২০১৬ - ২০২৩ প্রাণের বাংলা।

সম্পাদক ও প্রকাশক: আবিদা নাসরীন কলি।

Email: Article: [email protected], Avertising: [email protected]

Phone: +8801818189677, +8801717256199