বিশিষ্ট সাংবাদিক সাগর চৌধুরী। একদা কর্মরত ছিলেন বিবিসি’র বাংলা বিভাগে। তারও আগে কলকাতার বিভিন্ন পত্রিকা এবং বার্তা সংস্থায়। একদা নানান কাজের ভিড়ে বাংলা চলচ্চিত্রের জন্য ইংরেজি সাবটাইটেল রচনার কাজও করেছেন। সত্যজিৎ রায়, মৃণাল সেন, তরুণ মজুমদার, নব্যেন্দু চট্টোপাধ্যায়ের মতো বিশিষ্ট চলচ্চিত্র পরিচালকদের সিনেমায় তিনি ছিলেন সাবটাইটেল লেখক। এখন এক ধরণের অবসর জীবন যাপন করছেন। বসবাস করেন কলকাতা শহরে। সাংবাদিকতার সঙ্গে সম্পর্ক বেশ কিছুটা মেরুদূর হলেও কলম থেমে যায়নি। বই লিখছেন, অনুবাদ করছেন। সাগর চৌধুরী জীবনকে দেখেছেন নানান কৌণিকে আলো ফেলে। দীর্ঘদিন বিলেতে ছিলেন। ঘুরেওবেড়িয়েছেন নানান দেশে। জীবনও তাকে দেখেছে খুব কাছে থেকে। সেই জীবনপ্রবাহের গল্প শোনাতেই প্রাণের বাংলার জন্য কলম ধরলেন সাগর চৌধুরী। প্রাণের বাংলার পাতায় এখন থেকে জীবনের গল্প বলবেন তিনি।
বাইশ.
কিছুদিন আগে কলকাতার কলেজ স্ট্রীট এলাকার কয়েকটি প্রধান বৈশিষ্ট্য ও আকর্ষণের বিষয়ে লেখার সময় সেখানকার বিখ্যাত বইবাজারের কথা উল্লেখ করেছিলাম, যা ভারতের সবচেয়ে বড় বইবাজার হিসাবে পরিচিত। এই প্রসঙ্গে লিখেছিলাম যে কলেজ স্ট্রীট এলাকাতেই রয়েছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পুরনো বইয়ের বাজার। আর বিশ্বের প্রথম বৃহত্তম পুরনো বই-এর বাজার? এই বাজারটি অবস্থিত ব্রিটেন তথা ইউনাইটেড কিংডম বা যুক্তরাজ্যের ইংল্যান্ড-ওয়েলস্ সীমান্তের আধা গ্রাম-আধা শহর ‘হ্যে-অন-ওয়াই’ (Hay-on-Wye), , অর্থাৎ ‘ওয়াই নদীর তীরবর্তী হ্যে’ নামক জনপদটিতে। স্বাভাবিকভাবেই গোটা দুনিয়ার পুস্তকপ্রেমী ও সংগ্রাহকদের কাছে এই জায়গাটি অতীব জনপ্রিয় এবং হ্যে-অন-ওয়াই ‘ভিলেজ অভ্ বুকস্’ বা ‘বইয়ের গ্রাম’ নামেই প্রসিদ্ধ। প্রায় হাজার বছরের পুরনো এই গ্রামটি কালক্রমে একটি ছোট্ট, অখ্যাত শহর হয়ে উঠলেও তার দৈনন্দিন জীবনযাত্রা বরাবরই অলস, নিস্তরঙ্গ থেকে যায়। তারপর এক সময়ে এই ‘বইয়ের গ্রাম’ কিংবা হয়তো ‘বইয়ের শহর’ নতুন একটা পরিচিতি অর্জন করে ‘কিংডম অভ্ বুকস্’ বা ‘বইয়ের রাজত্ব’। কীভাবে সেটা হলো সে’কথায় পরে আসছি।
হ্যে-অন-ওয়াই’এর স্থায়ী বা স্থানীয় বাসিন্দাদের সংখ্যা তেমন বেশী নয়। কিন্তু বছরের প্রতি দিনই সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বহিরাগতদের ভীড়ে এই নাতিবৃহৎ জনপদটি গম্গম্ করে। এখানে রাত্রিবাসের উপযোগী সরাইখানা বা অতিথিশালা দু-একটি থাকলেও, চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। কাজেই আগন্তুকদের মধ্যে যারা এখানে রাত কাটাতে চায় তাদের অনেককেই আশেপাশে কাছাকাছির মধ্যে অন্য কোন শহরে রাতের জন্য আস্তানা খুঁজে নিতে হয়। ঊর্মি আর আমিও তেমনটাই করেছি দু’বার। দ্বিতীয়বার আমাদের সঙ্গে আরো দু’জন বন্ধুও ছিলেন।
লন্ডন থেকে গাড়ি চালিয়ে হ্যে-অন-ওয়াই যেতে সময় লাগে ঘন্টা চারেকের মতো। তবে একটানা চার ঘন্টা গাড়ি চালানো অবশ্যই কিছুটা ক্লান্তিকর, তাই আরো এক থেকে দেড় ঘন্টা হিসাবে ধরাই ভালো মাঝপথে যাত্রাবিরতির জন্য। আবহাওয়া ভালো থাকলে পাঁচ-ছয় ঘন্টা পথে থাকা তেমন সমস্যা নয়, বিশেষ করে যাত্রাপথ যদি উপভোগ্য হয়, এবং লন্ডন ছাড়ার পর যে মোটরওয়ে-টা আমাদের ধরতে হয়েছিলো তার দুপাশের নৈসর্গিক দৃশ্য তেমনই ছিলো। সুতরাং ঊর্মি আর আমি বেলা এগারোটা নাগাদ লন্ডন থেকে রওনা হয়ে সন্ধ্যা ছ’টার কাছাকাছি সময়ে আমাদের গন্তব্যে পৌঁছে গেলাম। একটু ভুল বললাম, সরাসরি আমাদের গন্তব্যে নয় কারণ আমার জানতাম হ্যে-অন-ওয়াই-তে রাত কাটানোর সুবিধা হবে না। তাই আগে থেকেই আমরা ঠিক করে নিয়েছিলাম যে ঐ জায়গাটির সবচেয়ে কাছাকাছি কোথাও রাতে থেকে গিয়ে পরদিন সকালে আমাদের আসল গন্তব্য ‘বইয়ের গ্রামে’ চলে যাবো। ততক্ষণে ঘড়িতে ছ’টা বেজে গেলেও কোন অসুবিধা ছিলো না কারণ সময়টা ছিলো ওদেশের ‘সামার’ বা গ্রীষ্মকাল যখন সুর্য ডুবতে ডুবতে প্রায় ন’টা বেজে যায়। আকাশ তখনও রৌদ্রোজ্জ্বল।
যেখানে আমরা থামলাম সেই শহরটার নাম ‘হেরেফোর্ড’ (Hereford), ইংল্যান্ডের শেষ সীমানায় অবস্থিত শহরগুলোর একটা। ওয়াই নদী সামান্য দূর দিয়ে বহে চলেছে, যেটা পেরোলেই হ্যে-অন-ওয়াই। গাড়িতে পৌঁছতে বড় জোর চল্লিশ-পঁয়তাল্লিশ মিনিট। রাতে থাকার জন্য একটা সরাইখানা ইংরেজরা যাদের বলে ‘বেড অ্যান্ড ব্রেক্ফাস্ট’, অর্থাৎ ‘শয্যা ও প্রাতরাশ’ বা সংক্ষেপে ই্ই খুঁজে পেতে বেশী সময় লাগলো না। পাশেই নির্দিষ্ট জায়গায় গাড়ি পার্ক করে আমাদের ঘরে ঢুকে হাতমুখ ধুয়ে ‘ফ্রেশ’ হয়ে নেওয়ার পর সেখানকার তত্বাবধায়ক মহিলাকে জিজ্ঞাসা করে জানলাম সামনের রাস্তায় কয়েক মিনিট হাঁটলেই বেশ কয়েকটা রেস্তোরাঁ পাওয়া যাবে। ধীরেসুস্থে তাদের একটায় গিয়ে রাতের খাওয়া সারলাম, তারপর সরাইখানার ঘরে ফিরে পোষাক পালটে বিছানায় আর প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ঘুম। পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে একেবারে বেরোনোর জন্য তৈরি হয়ে খাবার ঘরে গিয়ে চা ও আমার নিজস্ব পছন্দ কফীর সাথে ‘ট্র্যাডিশনাল ইংলিশ ব্রেক্ফাস্ট’ টোস্ট, এগ পোচ, হ্যাশ ব্রাউন আর বেকন খেয়ে গাড়িতে গিয়ে বসলাম। সরাইখানায় জানিয়ে দিলাম যে আমরা সন্ধ্যা নাগাদ ফিরে সেই রাতটাও থাকবো আর চেক্-আউট করবো পরদিন সকালে প্রাতরাশের পর।
হেরেফোর্ড শহরের পাশ দিয়ে প্রবাহিত ওয়াই নদীর উপরের নাতিদীর্ঘ সেতুটি পেরোলেই ওপারে ওয়েলস্-এর সীমানা শুরু। সেখান থেকে সোজা রাস্তা ধরে মাইল দশেক দূরত্বেই হ্যে-অন-ওয়াই, পৌঁছতে আমাদের লাগলো চল্লিশ মিনিট। অতীব দৃষ্টিনন্দন, ছিমছাম, ছোট্ট একটি শহর, এক সময়ের গ্রাম, এক নজরে দেখলে মনে হতেই পারে যে ষোড়শ শতকের একটা ছবি যেন চোখের সামনে ভেসে উঠেছে। এভাবেই শহরটিকে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়ে আসছে বছরের পর বছর ধরে। এমনটা মনে হওয়ার আরেকটা কারণ হলো, সুদূর অতীতের ঐ দিনগুলোতে যখন গ্রামের বা শহরের পাথরে বাঁধানো সংকীর্ণ রাস্তায় ঘোড়া বা ঘোড়ায় টানা শকট ছাড়া আর কোন যানবাহন চলতো না, সেই প্রথা এই যুগেও বজায় রাখা হচ্ছে। আজকের দিনেও শহরের ভেতরে মোটরগাড়ি বা অন্য কোন যন্ত্রচালিত যানের প্রবেশাধিকার নেই। আধুনিক যান চলার অনুমতি দেওয়া হয় কেবল শহরের সীমানার বাইরে তাকে ঘিরে রাস্তার ওপরে। আমাদেরও যথারীতি অন্য সব আগন্তুকদের মতো শহরের বাইরের পার্কিং এলাকায় গাড়ি রেখে পায়ে হেঁটে শহরে ঢুকতে হলো।
এবারে আসি কীভাবে হ্যে-অন-ওয়াই ‘বইয়ের গ্রাম বা শহর’ থেকে ‘বইয়ের রাজত্ব’ হয়ে উঠলো সে প্রসঙ্গে। ইতিহাসের বিচারে এই প্রক্রিয়া কিন্তু তেমন দীর্ঘ নয়, অর্ধ শতাব্দীর কমই। এই গ্রামে প্রায় দু’শ বছরের পুরনো একটা ক্যাসল্ বা প্রাসাদ ছিলো, প্রকৃতপক্ষে এখনও রয়েছে। যে কোন কারণেই হোক, এই প্রাসাদের মালিক পরিবারের সদস্যরা অনেক বছর আগেই এটাকে পরিত্যাগ করে অন্যত্র চলে গিয়েছিলো এবং বছরের পর বছর প্রাসাদটা পরিত্যক্ত হয়ে পড়েছিলো। জরাজীর্ণ, ভগ্নপ্রায় অবস্থায়। সত্তরের দশকের মাঝামাঝি রিচার্ড বুথ নামে এক ব্যক্তি প্রাসাদের তৎকালীন মালিকদের খুঁজে বার করে তাদের কাছ থেকে সেটা কিনে নেন যৎসামান্য দামে। তারপর তিনি দেখেন প্রাসাদটা গাদা গাদা ভাঙাচোরা, ছেঁড়াখোঁড়া, ব্যবহারের অনুপযুক্ত আসবাব ও অন্যান্য জিনিষে ভরা যেগুলো ফেলেই দিতে হবে। ঝাড়াইবাছাই করতে গিয়ে রিচার্ড একটা পারিবারিক লাইব্রেরীর সন্ধান পেলেন যার মধ্যে রয়েছে হাজার দুয়েকেরও বেশী বই, প্রায় সবই দামি চামড়ায় বাঁধানো, এবং বেশ কিছু প্রাচীন দলিল এবং দুষ্প্রাপ্য মানচিত্র। প্রাসাদের মালিক পরিবারের বহু যুগের সংগ্রহ। এদের কিছু কিছু অবশ্য তখন আর ব্যবহারের যোগ্য ছিলো না, তবে অনেকগুলোই মোটামুটি অবিকৃত চেহারায় পাওয়া গেলো। এই সমস্ত বইপত্র, দলিল, মানচিত্র ইত্যাদি নিয়ে রিচার্ড বুথ একটা দোকান খুলে ফেললেন। চারপাশের অন্যান্য শহরে, এমনকী লন্ডনেও, প্রচারের ব্যবস্থা করলেন যে তাঁর কাছে প্রাচীন গ্রন্থ এবং দুষ্প্রাপ্য দলিল ইত্যাদি আছে যেগুলো তিনি এইসব দ্রব্যের সমঝদার লোকদের কাছে বিক্রী করতে পারেন উপযুক্ত দামের বিনিময়ে। অচিরেই আগ্রহী পুস্তকপ্রেমীদের এবং দুষ্প্রাপ্য প্রাচীন দলিলপত্রের সংগ্রাহকদের আগমন ঘটতে লাগলো হ্যে-অন-ওয়াই-এর ক্যাসল্-এ, রিচার্ড বুথ তখন যার মালিক। এই খবর মুখে মুখে চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়তে খুব বেশী সময় লাগলো না এবং অজানা অখ্যাত গ্রামটি রীতিমতো বিখ্যাত হয়ে উঠলো।
ঐ সময়ে হ্যে-অন-ওয়াই’এর জনসংখ্যা ছিলো হাজার দেড়েকের মতো, ঘরবাড়ির সংখ্যা হয়তো সাকুল্যে শ’খানেক। এই স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন রিচার্ড বুথ-এর দৃষ্টান্তে অনুপ্রাণিত হয়ে নিজেরাও পুরনো বইপত্রের ব্যবসা শুরু করে দিলো। এদের অনেকেরই কাছে উত্তরাধিকারসুত্রে প্রাপ্ত বইপত্র ও ঐ জাতীয় সামগ্রী ছিলো, যেগুলো বংশপরাম্পরায় তাদের পারিবারিক সম্পত্তি। এদের যে কোন রকম বাজারদর থাকতে পারে সে’ব্যাপারে কোন ধারণাই এইসব লোকের ছিলো না। রিচার্ড বুথকে দেখে তাদের চোখ খুলে গেলো এবং তারাও সবাই একে একে নিজেদের বাড়িতে পুরনো বইয়ের দোকান খুলে বসা শুরু করলো। কিছু দিনের মধ্যেই দেখা গেলো যে গ্রামের কমপক্ষে গোটা পঞ্চাশেক বাড়িতেই ছোাটখাটো দোকান বসে গেছে, যেগুলোতে বইপত্র বা অন্যান্য টুকিটাকি প্রাচীন জিনিষের ক্রেতারও অভাব হচ্ছে না। এইভাবেই হ্যে-অন-ওয়াই ধীরে ধীরে দেশবিদেশের লোকজনের কাছে পরিচিত হতে লাগলো ‘বইয়ের গ্রাম’ বা ‘বইয়ের শহর’ নামে। হ্যাঁ, ততদিনে হ্যে-অন-ওয়াই-এর খ্যাতি ইংল্যান্ড-ওয়েলস্ ছাড়া ব্রিটেনের অন্যান্য অঞ্চলেও, এমনকী ব্রিটেনের বাইরেও ছড়িয়ে পড়েছে।
এখন, যাঁকে দিয়ে এতসব কান্ডের সূচনা, সেই রিচার্ড বুথ ছিলেন যথেষ্ট খামখেয়ালী ধরনের একজন ভদ্রলোক। একদিন তাঁর মাথায় একটা উদ্ভট খেয়াল জেগে উঠলো। ১৯৭৭ সালের ১ এপ্রিল তারিখে তিনি হঠাৎ ঘোষণা করলেন যে হ্যে-অন-ওয়াই এখন থেকে নিছক একটা গ্রাম নয়, এটা একটা রাজত্ব ‘কিংডম অভ্ বুকস্’ এবং তিনিই হলেন এই রাজত্বের স্বঘোষিত রাজা। সবাই প্রথমে তাঁর এই ঘোষণাকে পয়লা এপ্রিলের ঠাট্টা (ইংরেজি মতে) ধরে নিয়ে বেশ মজাই পেলো, কিন্তু রিচার্ডের হাবভাব, চালচলন দেখে অচিরেই বোঝা গেলো তাঁর নিজের কাছে এটা মোটেই ঠাট্টা নয় বরং গুরুত্বপূর্ণ একটা সিদ্ধান্ত। জমকালো রাজবেশ পরে, মাথায় মুকুট চড়িয়ে জনসমক্ষে বেরোতে আর ঘোরাফেরা করতে শুরু করলেন তিনি, এমনকী তাঁর রাজত্বের জন্য বিশেষ মুদ্রাও চালু করলেন। এই মুদ্রা অবশ্যই যাকে অর্থনীতির ভাষায় ‘লীগ্যাল টেন্ডার’, অর্থাৎ বৈধ সরকারী মুদ্রা বলা হয় তা ছিলো না এবং এটা ব্যবহার করে খোলা বাজারে কেনাবেচা করাও যেতো না। কিন্তু হ্যে-অন-ওয়াই-এর বাসিন্দারা এবং বইবাজারে আসা বহিরাগতরাও পুরো ব্যাপারটাকে খুবই উপভোগ করলো। এই সব কিছু বইয়ের ‘গ্রাম’ বা ‘শহর’ বা ‘রাজত্ব’ যাই বলা যাক, তার আকর্ষণ আরো বাড়িয়ে তুললো। এখন এখানকার অধিকাংশ বাড়িতেই একটা করে দোকান রয়েছে এবং ঐসব দোকানে মজুত বইয়ের মোট সংখ্যা এক কোটিরও বেশী ছাড়া কম নয়! সেদিন সকালে আমরা হ্যে-অন-ওয়াই-তে পৌঁছলাম দশটা-সাড়ে দশটা নাগাদ। তারপর ঘন্টা তিনেক ধরে দোকান থেকে দোকানে ঢুঁ মারা শুরু করলাম। কত বিচিত্র বিষয়ের উপর কত বিচিত্র বই। সবই পুরনো, অনেকগুলোই কিছুটা সাবধানে নাড়াচাড়া করতে হয়, তবে মোটামুটি অক্ষত ও ব্যবহারযোগ্য। আমাদের দুজনকে তো কোনভাবেই প্রাচীন পুঁথি বা ঐ জাতীয় বস্তুর সংগ্রাহক বলা যায় না, তবুও পছন্দসই কয়েকটা বই আমরা খুঁজেপেতে বার করতে পারলাম। বইয়ের দামও লোভনীয়ভাবেই কম। একটা দোকান ছিলো খুবই ইন্টারেস্টিং, যার নাম ‘ব্যাগ অভ্ বুকস্’ (Bag of Books)| । এই দোকানের বৈশিষ্ট্য হলো, এটাতে ছোটবড় নানা আকারের ব্যাগ রাখা আছে যেগুলো কেনা যায় এক একটা ৫ পাউন্ড কিংবা ১০ পাউন্ড দামে। ব্যাগ কেনার পর ক্রেতা তার ভিতরে যতগুলো ইচ্ছে বই ঢোকাতে পারবে, তাদের মোট দাম ব্যাগের দামের চেয়ে অনেকগুণ বেশী হলেও আপত্তি নেই। শর্ত একটাই যত খুসী বই ব্যাগে ঢোকাও, কিন্তু ব্যাগ যেন একটুও না ছেঁড়ে! ঊর্মিও ৫ পাউন্ড দামের একটা ব্যাগ কিনে চট্পট্ তার ভেতরে খান পাঁচেক মোটা মোটা বই ঢুকিয়ে নিলো। একটা বই ছিলো চলচ্চিত্র নির্মাণের আদি যুগের ইতিহাস-সংক্রান্ত, যেটা হয়তো আমাদের ছেলে রূপকের কাজে লাগতে পারতো কারণ ও তখন কলেজে ঐ বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করার কথা ভাবছিলো। শেষ পর্যন্ত অবশ্য সত্যিই বইটা ওর কাজে লেগেছিলো কিনা সেটা জানি না।
এসব করতে করতে কেটে গেলো তিন ঘন্টারও বেশী। ক্ষিদেয় পেট চুঁই চুঁই। একটা ‘পাব’এ ঢুকলাম লাঞ্চ করতে। খুবই চমৎকার ‘ফিশ অ্যান্ড চিপস্’ (মাছভাজা আর আলুভাজা) খেয়েছিলাম সেখানে, সঙ্গে আমার দুপুরের প্রিয় পানীয়। ‘ফিশ অ্যান্ড চিপস্’ বরাবরই আমার বিশেষ পছন্দের খাবার। পরিতাপের বিষয়, দেশে ফেরার পর এই খাবারটি মনোমত আর পাই না।
খাওয়াদাওয়ার পর পাব থেকে বেরিয়ে শহরের প্রধান রাস্তাটা ধরে একটা চক্কর দিয়ে এলাম। আর কোন দোকানে অবশ্য ঢুকলাম না, তবে লাঞ্চের আগে যে দোকানগুলো থেকে বই কিনেছিলাম সেগুলো ছাড়া অন্যগুলোতে বুড়ি ছোঁওয়ার মতো করে একবার উঁকি দিলাম। ভাবলাম, পরে যদি আবার কথনও আসতে পারি তাহলে এগুলোর ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করবো। খানিক বাদে শহরের চৌহদ্দীর বাইরে পার্কিং এলাকায় ফিরে গিয়ে গাড়িতে উঠে বসলাম। হেরেফোর্ড-এর সরাইখানায় আজ রাত্রিবাস, কাল সকালে লন্ডনে ফেরা। আজকের দিনটা কাটলো খুবই ভালো।
হ্যে-অন-ওয়াই-তে যাওয়ার দ্বিতীয় সুযোগ এলো বছর তিনেক পরে। সেবার লন্ডনে আমাদের অতিথি হয়েছিলেন আমাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু, বাংলাদেশের বিশিষ্ট লেখক ও প্রকাশক মফিদুল হক এবং তাঁর পত্নী সীমা। প্রসঙ্গত, মফিদুল বর্তমানে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরের অন্যতম ট্রাস্টী, বছর কয়েক আগে ‘২১শে পদক’ লাভ করেছেন। যাই হোক, ‘বইয়ের শহর’ হ্যে-অন-ওয়াই-এর কথা শুনে মফিদুল আর সীমা দুজনেই যারপরনাই উৎসাহিত হয়ে উঠলেন। দিনক্ষণ হিসাব করে সেখানে ঘুরে আসার একটা পরিকল্পনাও স্থির করা হলো। এবারও আগের বারের মতো হেরেফোর্ড শহরে এক রাত কাটিয়ে পরদিন সকালে হ্যে-অন-ওয়াই যাওয়ার প্রস্তাব দিলাম। তাতে কারোরই কোন আপত্তি হলো না। তবে এযাত্রায় হেরেফোর্ড শহরে রাত্রিবাস করার একটা নতুন জায়গার সন্ধান লন্ডন ছাড়ার আগেই পেয়ে গিয়ে আমি সেটাকেই ঠিক করে ফেললাম এবং দেখা গেলো, কাকতালীয়ভাবেই, এটা আগের জায়গাটার তুলনায় অনেক উন্নত মানের। শহরের সম্পন্ন এলাকায় অবস্থিত বেশ বড় ও সুন্দর একটা বাড়ি, মালিক ও মালকিন সেখানেই থাকেন, ‘বেড অ্যান্ড ব্রেকফাস্ট’ চালান ঠিক বাড়তি আয়ের জন্য নয়, বাড়ির রক্ষণাবেক্ষণের খরচে কিছুটা সাশ্রয়ের জন্য। বাড়ির ভেতরে ঢুকে আমরা চারজনেই মুগ্ধ। অতি রুচিসম্মতভাবে সাজানো ঘরদোর, দামি আসবাবপত্র, মেঝেতে পাতা মহার্ঘ কার্পেট, ঘরের দেওয়ালে টাঙানো বিখ্যাত চিত্রশিল্পী যোশুয়া রেনল্ডস্-এর আঁকা বেশ কয়েকটা ছবি। শিল্পকলার বাজারে এই ছবিগুলোর দাম কয়েক লক্ষ পাউন্ড তো হবেই। গৃহকর্তা ও কর্ত্রী বললেন এগুলো সবই তাঁদের উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া পারিবারিক সম্পদ।
ঐ রাতে তো আমরা বাড়ির বাইরে বেরিয়ে নৈশাহার সেরে নিলাম। আমাদের জন্য নির্দিষ্ট দু’টি শয়নকক্ষ ছিলো খুবই আরামদায়ক, সংলগ্ন বাথরূমও চমৎকার। পরদিন সকালে প্রাতরাশের টেবিলেও অপেক্ষা করছিলো আরেকটা চমক। চা-কফী, অন্যান্য আহার্য পরিবেশিত হলো সৌখিন মূল্যবান ‘বোন চায়না’ পেয়ালায় ও পাত্রে, ছুরি-কাঁটা-চামচ খাঁটি রূপোর, ন্যাপকিন দামি কাপড়ের। গৃহকর্তা ও কর্ত্রী দুজনেই সযতেœ প্রাতরাশ পর্ব তদারক করলেন। এমন ধরনের বিলাসবহুল ব্যবস্থায় আমরা কিছুটা শংকিত হয়েছিলাম এই ভেবে যে প্রদেয় দক্ষিণা হয়তো যথেষ্ট বেশীই হবে, কিন্তু দেখা গেলো সাধারণ ‘বেড অ্যান্ড ব্রেক্ফাস্ট’এর তুলনায় তেমন কিছু বেশী খরচ আমাদের দিতে হলো না। ঐ দম্পতিকে তাঁদের অতিথিপরায়ণতার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে আমাদের গন্তব্যে রওনা হয়ে গেলাম আমরা।
‘বইয়ের শহর’ হ্যে-অন-ওয়াই দেখে মফিদুল এবং সীমা দুজনেই খুবই মুগ্ধ হয়েছিলেন। মফিদুলের তো ভালো লাগার কথাই যেহেতু মূলতঃ তিনি বইপত্রের জগতেরই লোক। আর তাঁর পুস্তকপ্রেম পত্নীর মধ্যেও অবশ্যই কিছুটা সঞ্চারিত হয়েছে স্বাভাবিকভাবেই। কবির উক্তি ‘পতির পূণ্যে সতীর পূণ্য’ মনে পড়ছে? সে’রকমই ব্যাপার অনেকটা। বেশ কয়েকটা দোকানে ঘুরে মফিদুল অনেকগুলোই বই কিনে ফেললেন। দু-তিনবার বললেনও, ‘কিনছি তো, কিন্তু এই বোঝা ঢাকা পর্যন্ত টেনে নিয়ে যাবো কীভাবে তাই ভাবছি।’ আসলে বইপত্র ভালোবাসে যারা তাদের পক্ষে চোখের সামনে অজস্র বইয়ের সম্ভার দেখে লোভ সামলানো কঠিন। যাই হোক, ঊর্মির আর আমার প্রথমবার হ্যে-অন-ওয়াই সফরের মতো এবারও আমরা চারজন সারা দিন কাটালাম অনাবিল আনন্দে। দুপুরের খাওয়া সারলাম আগের বারের পাব-এই। বিকালের দিকে কিছুটা শ্রান্ত দেহে কিন্তু পরিতৃপ্ত মনে বাড়ির পথে। হ্যাঁ, এবারে আমরা আর দ্বিতীয় একটা রাত বাড়ির বাইরে কাটাবো না আগেই স্থির করেছিলাম, তাই মাঝপথে থামার প্রশ্ন ছিলো না সন্ধ্যার মুখে চা-পানের সংক্ষিপ্ত বিরতি ছাড়া। বাড়ি পৌঁছে গেলাম রাত দশটার একটু আগেই। তখনও তেমন অন্ধকার নেমে আসেনি।
ছবি: গুগল
এস.এম. সুলতান : আমাদের চিত্রশিল্প জগতের আদমসুরত
23 Jan 2025
5195 বার পড়া হয়েছে
রাজনীতির টেবিলে…
16 Jan 2025
4390 বার পড়া হয়েছে
সঞ্জীব চৌধুরীকে স্মরণ: ছিলো গান ছিলো প্রাণ
2 Jan 2025
5175 বার পড়া হয়েছে
নতুন বোতলে পুরনো তারিখ
2 Jan 2025
3420 বার পড়া হয়েছে
সৈয়দ শামসুল হক ৮৯ তম জন্মদিনে শ্রদ্ধা
27 Dec 2024
4260 বার পড়া হয়েছে
চলে যাওয়া মানে প্রস্থান নয়…
19 Dec 2024
3880 বার পড়া হয়েছে
চলে গেলেন আত্মিক দু‘জন মানুষ
13 Dec 2024
2710 বার পড়া হয়েছে
ডিসেম্বরের সেই দিনরাত্রিগুলি
5 Dec 2024
2680 বার পড়া হয়েছে
কোথায় যাচ্ছেন এলোমেলো বাবু
21 Nov 2024
2935 বার পড়া হয়েছে
শীতের চিঠির দ্বিতীয়াংশ
21 Nov 2024
2650 বার পড়া হয়েছে
শীতের চিঠির প্রথমাংশ
14 Nov 2024
2075 বার পড়া হয়েছে
তোমরা ফেলে দাও আমি তুলে রাখি
14 Nov 2024
2305 বার পড়া হয়েছে
বিদায়ী অভিবাদন, রাজনীতির শুদ্ধ ব্যক্তিত্ব অগ্নিকন্যা মতিয়া চৌধুরী
17 Oct 2024
2080 বার পড়া হয়েছে
পূজার ছুটিতে…
10 Oct 2024
2070 বার পড়া হয়েছে
অর্থহীন ভাবনার ভেতর দিয়েই কখনও কখনও বেরিয়ে আসতো মূল ভাবনা
27 Jun 2024
2615 বার পড়া হয়েছে
ষাটের পথে ষাটের স্মৃতি …
27 Jun 2024
2475 বার পড়া হয়েছে
প্রফেশনাল জেলাসি আর অহংকার এক বিষয় নয়…
30 May 2024
2770 বার পড়া হয়েছে
সুর করা…
3 May 2024
3960 বার পড়া হয়েছে
আমার বৃক্ষের…
25 Apr 2024
5110 বার পড়া হয়েছে
ব্যান্ড করার ফর্মুলা
14 Mar 2024
2960 বার পড়া হয়েছে
আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি
29 Feb 2024
3225 বার পড়া হয়েছে
রাজশাহীর আকাশে এক পশলা বৃষ্টি
22 Feb 2024
4850 বার পড়া হয়েছে
জন্মস্থানে লালগালিচা সংবর্ধনা পেলেন বিশ্বের সবচেয়ে প্রবীণ ব্যক্তি
22 Feb 2024
2870 বার পড়া হয়েছে
আমাদের ব্যান্ডের গান কি সম্পূর্ণ ওয়েস্টার্ন
8 Feb 2024
2960 বার পড়া হয়েছে
রাজশাহীর আকাশে এক পশলা বৃষ্টি
8 Feb 2024
3165 বার পড়া হয়েছে
রাজশাহীর আকাশে এক পশলা বৃষ্টি
1 Feb 2024
3040 বার পড়া হয়েছে
রাজশাহীর আকাশে এক পশলা বৃষ্টি
25 Jan 2024
4205 বার পড়া হয়েছে
প্রিয় আজম ভাই...
18 Jan 2024
3640 বার পড়া হয়েছে
সেই এক ট্রেনের গল্প
18 Jan 2024
2785 বার পড়া হয়েছে
স্টেজ পারফর্মেন্সর জন্য প্রযোজনীয় কিছু কথা…২
11 Jan 2024
2870 বার পড়া হয়েছে
অন্তরালে অসাধারণ রাশিদ খান…
11 Jan 2024
2290 বার পড়া হয়েছে
স্টেজ পারফর্মেন্সর জন্য প্রযোজনীয় কিছু কথা…
4 Jan 2024
3135 বার পড়া হয়েছে
বিকেলে বউ বাজার
28 Dec 2023
4390 বার পড়া হয়েছে
মানুষ ডাহুকও বটে
16 Dec 2023
2105 বার পড়া হয়েছে
বিজয়ের মাসে পথে শোনা কথা
13 Dec 2023
4000 বার পড়া হয়েছে
জীবন যেখানে যেমন...
7 Dec 2023
4535 বার পড়া হয়েছে
আবেগের লাগাম না হারানো শোভন, হারানোটা অনিরাপদ
17 Nov 2023
4430 বার পড়া হয়েছে
পাতা-ঝরার দিনগুলো
19 Oct 2023
6115 বার পড়া হয়েছে
একজন সোহান ভাই…
14 Sept 2023
4985 বার পড়া হয়েছে
চিঠিতে জানাবেন মোহন ভাই
1 Jun 2023
8935 বার পড়া হয়েছে
ভারতের ডুয়ার্সে বার্ডিং…
20 Apr 2023
4170 বার পড়া হয়েছে
স্পেনের বাস্ক অঞ্চলের আতিথেয়তা ও ভোজন
13 Apr 2023
5060 বার পড়া হয়েছে
ভবিষ্যতে প্রত্যাবর্তন ৩৪
10 Nov 2022
3055 বার পড়া হয়েছে
ভবিষ্যতে প্রত্যাবর্তন ৩৩
27 Oct 2022
2600 বার পড়া হয়েছে
ভবিষ্যতে প্রত্যাবর্তন ৩২
13 Oct 2022
2735 বার পড়া হয়েছে
ভবিষ্যতে প্রত্যাবর্তন ৩১
29 Sept 2022
2420 বার পড়া হয়েছে
ভবিষ্যতে প্রত্যাবর্তন ৩০
22 Sept 2022
2415 বার পড়া হয়েছে
ভবিষ্যতে প্রত্যাবর্তন ২৯
15 Sept 2022
2290 বার পড়া হয়েছে
ভবিষ্যতে প্রত্যাবর্তন ২৮
8 Sept 2022
2085 বার পড়া হয়েছে
ভবিষ্যতে প্রত্যাবর্তন ২৭
1 Sept 2022
2835 বার পড়া হয়েছে
ভবিষ্যতে প্রত্যাবর্তন ২৬
25 Aug 2022
3105 বার পড়া হয়েছে
ভবিষ্যতে প্রত্যাবর্তন ২৫
18 Aug 2022
2240 বার পড়া হয়েছে
ভবিষ্যতে প্রত্যাবর্তন ২৪
7 Jul 2022
2100 বার পড়া হয়েছে
ভবিষ্যতে প্রত্যাবর্তন ২৩
23 Jun 2022
2785 বার পড়া হয়েছে
ভবিষ্যতে প্রত্যাবর্তন ২২
16 Jun 2022
2245 বার পড়া হয়েছে
শব্দ করে পড়ার বৈচিত্রময় গুরুত্ব বিশ্বকে বুঝতে হবে
12 Jun 2022
1715 বার পড়া হয়েছে
ভবিষ্যতে প্রত্যাবর্তন ২১
9 Jun 2022
2030 বার পড়া হয়েছে
ভবিষ্যতে প্রত্যাবর্তন ২০
12 May 2022
2240 বার পড়া হয়েছে
ভবিষ্যতে প্রত্যাবর্তন ১৯
21 Apr 2022
2195 বার পড়া হয়েছে
ভবিষ্যতে প্রত্যাবর্তন ১৮
15 Apr 2022
2205 বার পড়া হয়েছে
ভবিষ্যতে প্রত্যাবর্তন ১৭
7 Apr 2022
2445 বার পড়া হয়েছে
ভবিষ্যতে প্রত্যাবর্তন ১৬
31 Mar 2022
1970 বার পড়া হয়েছে
ভবিষ্যতে প্রত্যাবর্তন ১৫
24 Mar 2022
1995 বার পড়া হয়েছে
ভবিষ্যতে প্রত্যাবর্তন ১৪
17 Mar 2022
2705 বার পড়া হয়েছে
ভবিষ্যতে প্রত্যাবর্তন ১৩
3 Mar 2022
2150 বার পড়া হয়েছে
ভবিষ্যতে প্রত্যাবর্তন ১২
24 Feb 2022
2125 বার পড়া হয়েছে
ভবিষ্যতে প্রত্যাবর্তন ১১
17 Feb 2022
2155 বার পড়া হয়েছে
আমার মুক্তি এই আকাশে
10 Feb 2022
2765 বার পড়া হয়েছে
ভবিষ্যতে প্রত্যাবর্তন ১০
3 Feb 2022
2295 বার পড়া হয়েছে
ভবিষ্যতে প্রত্যাবর্তন ৯
30 Dec 2021
2025 বার পড়া হয়েছে
ভবিষ্যতে প্রত্যাবর্তন ৮
23 Dec 2021
1965 বার পড়া হয়েছে
দুলছে হাওয়ায়
9 Dec 2021
2185 বার পড়া হয়েছে
ভবিষ্যতে প্রত্যাবর্তন ৭
9 Dec 2021
2250 বার পড়া হয়েছে
আঁধার রাতের জাহাজ
2 Dec 2021
2550 বার পড়া হয়েছে
ভবিষ্যতে প্রত্যাবর্তন ৬
2 Dec 2021
2100 বার পড়া হয়েছে
কান্না- হাসির দোল-দোলানো
25 Nov 2021
2855 বার পড়া হয়েছে
ভবিষ্যতে প্রত্যাবর্তন ৫
25 Nov 2021
2165 বার পড়া হয়েছে
কাঠের সেই উটটি
18 Nov 2021
2295 বার পড়া হয়েছে
ভবিষ্যতে প্রত্যাবর্তন ৪
18 Nov 2021
3140 বার পড়া হয়েছে
নাম না জানা মেয়েটি
11 Nov 2021
1980 বার পড়া হয়েছে
ভবিষ্যতে প্রত্যাবর্তন ৩
11 Nov 2021
1955 বার পড়া হয়েছে
সবারে আমি নমি
4 Nov 2021
1850 বার পড়া হয়েছে
ভবিষ্যতে প্রত্যাবর্তন ২
4 Nov 2021
2840 বার পড়া হয়েছে
ফেলেই দিলে
28 Oct 2021
1920 বার পড়া হয়েছে
ভবিষ্যতে প্রত্যাবর্তন ১
28 Oct 2021
2475 বার পড়া হয়েছে
জীবন জীবনেরই জন্যে
21 Oct 2021
2030 বার পড়া হয়েছে
তার আর পর নেই
7 Oct 2021
1900 বার পড়া হয়েছে
মরচে ধরা টর্চ
23 Sept 2021
1970 বার পড়া হয়েছে
পাতা-ঝরার দিন
16 Sept 2021
2825 বার পড়া হয়েছে
চমকে উঠলাম – ভেতরটা নাড়িয়ে দিল দৃশ্যটা
9 Sept 2021
2100 বার পড়া হয়েছে
আলো-আঁধারির আলেখ্য
2 Sept 2021
1615 বার পড়া হয়েছে
একদিন বৃষ্টিতে বিকেলে
30 Aug 2021
2050 বার পড়া হয়েছে
আছে-নাই এর আলেখ্য
26 Aug 2021
1640 বার পড়া হয়েছে
জীবন-ছোঁয়া মেয়েটি
12 Aug 2021
2110 বার পড়া হয়েছে
যেতে তো হবেই
5 Aug 2021
2140 বার পড়া হয়েছে
সুতো
29 Jul 2021
2010 বার পড়া হয়েছে
মানুষের খোলস
15 Jul 2021
2100 বার পড়া হয়েছে
মনে আছে তো
8 Jul 2021
1875 বার পড়া হয়েছে
শেকড়ের সন্ধানে
1 Jul 2021
1650 বার পড়া হয়েছে
নীড়ে ফেরা পাখী
17 Jun 2021
1755 বার পড়া হয়েছে
কনে দেখা আলো
10 Jun 2021
2040 বার পড়া হয়েছে
দ্বীপের সেই সব মানুষেরা
3 Jun 2021
2000 বার পড়া হয়েছে
যে দ্বীপের বয়স চার’শো বছর
20 May 2021
1810 বার পড়া হয়েছে
অচেনা দ্বীপের পথযাত্রা
6 May 2021
2050 বার পড়া হয়েছে
আমার প্রতিবাদের ভাষা...
8 Oct 2020
3320 বার পড়া হয়েছে
আয় আয় চাঁদ মামা...
23 Jul 2020
3480 বার পড়া হয়েছে
করোনাকালীন মানসিক স্বাস্থ্য ...
10 May 2020
3365 বার পড়া হয়েছে
দ্বিতীয় সুবীর নন্দী আর পাবে না বাংলাদেশ
7 May 2020
1845 বার পড়া হয়েছে
বাড়ি বদলের আগুনে মিথিলা…
7 Nov 2019
1995 বার পড়া হয়েছে
বিচার চাই…
11 Apr 2019
2050 বার পড়া হয়েছে
মনখারাপের সঙ্গে আড়ি…
25 Dec 2018
2180 বার পড়া হয়েছে
আবার শিব্রাম চক্কোত্তি
20 Dec 2018
3730 বার পড়া হয়েছে
সন্দেশ ১০০
6 Dec 2018
4585 বার পড়া হয়েছে
সেই হাসিমুখ আর দেখবো না…
22 May 2018
2055 বার পড়া হয়েছে
তিলোত্তমা ও একজন...
17 May 2018
1890 বার পড়া হয়েছে
সেটুকু বাকী জীবন মিস করবো
3 May 2018
2430 বার পড়া হয়েছে
প্রাণের মানুষ, কাছের মানুষ
23 Nov 2017
2685 বার পড়া হয়েছে
স্বত্ব © ২০১৬ - ২০২৩ প্রাণের বাংলা।
সম্পাদক ও প্রকাশক: আবিদা নাসরীন কলি।
Email: Article: [email protected], Avertising: [email protected]
Phone: +8801818189677, +8801717256199