আমাদের ব্যান্ডের গান কি সম্পূর্ণ ওয়েস্টার্ন

প্রাণের বাংলা ডেস্ক

এডমিন ডেস্ক, ঢাকা থেকে

প্রকাশ: 8 Feb 2024

2945 বার পড়া হয়েছে

Shoes
আশিকুজ্জামান টুলু

দেশের প্রখ্যাত মিউজিশিয়ান এবং গায়ক আশিকুজ্জামান টুলু। দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসে আছেন কিন্তু গানের পৃথিবীর সঙ্গে রয়েছে তার নিয়মিত যোগাযোগ।  লেখালেখির সঙ্গেও তার নিযমিত বসবাস । এবার প্রাণের বাংলায় গান আর গান বিষয়ক নানান ভাবনা নিয়ে সময় পেলেই লিখবেন তিনি।

আমাদের ব্যান্ড মিউজিকে যে গানগুলি আমরা করি সেগুলি সম্পূর্ণভাবে ওয়েস্টার্ন বলা যাবেনা । ঐ সুরগুলিতে এক ধরনের মিক্সচার অফ ওয়েস্টার্ন এবং আমাদের দেশীয় সুর আছে এবং সেই কারনেই গানগুলি আমাদের দেশের বাঙালী জনসাধারনের কাছে এতো প্রিয় । একেবারে যদি সম্পূর্ণ ভাবে ওয়েস্টার্ন হতো তাহলে বিষয়টা সর্বজনবিদিত হতোনা অর্থাৎ গ্রামগঞ্জ থেকে শুরু করে সব ধরনের মানুষের কাছে এখনকার মতো করে পৌঁছাত না । এখন প্রশ্ন হলো এই দেশীয় সুরের মিশ্রনটা কি আমরা ইচ্ছাকৃত করি? আসলে না, ইচ্ছাকৃত করিনা, এটা অটোমেটিকেলি আমাদের সুরে এসে যায় যেহেতু আমরা এই দেশের মাটিতে জন্মেছি । একটা এলাকার জলবায়ু, আবহাওয়া, সংস্কৃতি, সভ্যতা, মানুষ এবং তার আচার আচরনের প্রভাবে সেই এলাকার সঙ্গীতের সৃষ্টি হয় । আজ যদি ভারতের জয়পুরের মিউজিক কিংবা ভারতের সাউথের মিউজিক শোনা হয়, দেখা যাবে কোলকাতা কিংবা বম্বের সঙ্গে তার বিস্তর ফারাক আছে । কারনটা আমি আগেই বলেছি । এই কথাগুলি এই কারনে বললাম যে আমরা কুইন বা ডেভিড গিলমোর বা জিমি হেন্ড্রিক্স যাই শুনি, সেটা আমাদের ওয়েস্টার্ন ফিলটা দেয়, আমাদের সউলে শান্তি দেয়, অনেক কিছু শিখি এবং এগুলির প্রভাবে যে মিউজিকটা তৈরি করি দেশের জন্য সেখানে পাশ্চাত্যের সঙ্গীতের সঙ্গে দেশীয় সঙ্গীতের প্রভাবটাও থাকে । তাই এটা কোন ভাবেই বলা যাবেনা যে আমাদের দেশের মিউজিকের ফিল আমাদের ব্যান্ডের গানে নাই । থাকতেই হবে, যদি না থাকতো দেশের আপামর জনগন যেভাবে নিয়েছে, সেভাবে নিতে পারতো না । চাইম কিংবা আর্কেও দেশীয় ফিল অবশ্যই আছে তবে অ্যাপ্রোচটা ভিন্ন হওয়ায় হয়তো অনেকের কাছে মনে হতে পারে ঐগুলি সম্পূর্ণ ওয়েস্টার্ন । যেমন চাইমতো পুরা ফোক বেইজড মিউজিক ওরিয়েন্টেড । আর্কও অবশ্যই সম্পূর্ণ ওয়েস্টার্ন না, মিক্সচার ওফ ওয়েস্টার্ন অ্যান্ড দেশীয় সঙ্গীত । অর্থাৎ আমাদের উপমহাদেশীয় ইনফ্লুয়েন্স আর্ক ব্যান্ডেও আছে শুধু প্রেজেন্টেশনের কারনে অনেকের বুঝতে কষ্ট হতে পারে । আমার বাবা মরহুম ওস্তাদ মুন্সী রইসউদ্দিন বাংলা ক্লাসিক্যাল সঙ্গীতের সঙ্গীতজ্ঞ ছিলেন এবং আমাদের বাসায় আমার ছেলেবেলায় প্রচুর উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের চর্চা ছিলো । তিনি সঙ্গীতের ওপর বেশ কয়েকটি গ্রন্থ প্রনয়ন করেছেন, তারমধ্যে ছোটদের সারেগামা, প্রবেশিকা সঙ্গীতশিক্ষা পদ্ধতি, অভিনব শতরাগ উল্লেখযোগ্য । সেখান থেকে বেশ কিছু বাংলা ক্লাসিক্যাল শুনেছি । এছাড়া এতো ধরনের গান শুনেছি যেখানে সিম্ফনি, জ্যাজ, রক, পপ, মেটাল সহ হিন্দি বাংলা উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত এবং ইংরেজি ছাড়া বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন ভাষার মিউজিক ও গান রয়েছে । নিজের দেশীয় রক্তের কারনে রেফারেন্স দিতে গেলেই চলে আসে আমাদের উপমহাদেশীয় সঙ্গীত গুরুদের কথা যেগুলি আমাদের দেশের মিউজিকের সঙ্গে কোন না কোন ভাবে কানেক্টেড, হয়তো সেটা সাধারণ শ্রোতা বা দর্শক বুঝতে পারেনা । তার মানে এই নয় যে আমি বিদেশী ওয়েস্টার্ন মিউজিসিয়ানদের রেফারেন্স দেই না । যেখানে যেটা প্রয়োজন, আমি সেটাকেই ব্যাবহার করি । সব ক্ষেত্রে সবকিছুকে প্রয়োগ করা যায়না সঙ্গীতের ভিন্নতার কারনে । আসলে মিউজিক বিষয়টা ইন্টাররিলেটেড তাই কোথাও না কোথাও মিস্রন হবেই, এটাকে আটকানো যাবেনা ।

ছবিঃ গুগল

 

মন্তব্য করুন

Share Article

আরো পড়ুন

আরো পড়ুন

স্বত্ব © ২০১৬ - ২০২৩ প্রাণের বাংলা।

সম্পাদক ও প্রকাশক: আবিদা নাসরীন কলি।

Email: Article: [email protected], Avertising: [email protected]

Phone: +8801818189677, +8801717256199