হলো না শুধু মিঠুন আর মমতার

প্রাণের বাংলা ডেস্ক

এডমিন ডেস্ক, ঢাকা থেকে

প্রকাশ: 7 Sept 2023

2785 বার পড়া হয়েছে

Shoes

প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক মৃণাল সেনের মৃগয়া ছবির শুটিং শেষে কলকাতায় ফিরে গাড়ি থেকে নামার সময় অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী তার  সহঅভিনেত্রী মমতাশংকরকে বলেছিলেন-তোকে আমি ভালোবেসে ফেলেছি।

সময়টা ১৯৭৫ সাল। মৃণাল সেন তৈরী করছেন তার আলোচিত সিনেমা ‘মৃগয়া। মিঠুন তখনও কলকাতার সিনেমা পাড়ায় গুটি গুটি পা ফেলে হাঁটছেন। তার সহশিল্পী মমতাশংকরেরও নতুন আগমন ঘটেছে। মৃগয়া ছবিতে কাজ করতে গিয়েই আচমকা ঘনিষ্টতা তৈরি হয় দু‘জনের।মমতাশংকর তখন একজনের বাগদত্তা। তাদের চার হাত এক হয়ে যাবার কথা খুব দ্রুত। সেই মানুষটির নাম চন্দ্রোদয়। হঠাৎ মিঠুনের ভালোবাসার ঢেউ লেগে পাড় ভাঙলো মমতারও। ঝড় উঠলো, পাতা খসে পড়লো। নতুন এক ভালোবাসার গল্প ডানা মেলে দিলো জীবনে।

কিন্তু চন্দ্রোদয়কে তো জানাতে হবে দু‘জনার চেনা পথ দু‘টি দিকে চলে যাওয়ার কথা। মমতাশংকর ফোন করে জানালেন তার সব কথা চন্দ্রোদয়কে।সব শুনে চন্দ্রোদয় সেদিন পাথর হয়ে গিয়েছিলেন। কী বলছে মমতা! তবে মমতা মিঠুন চক্রবর্তীর নামটা বলার আগেই আঁচ করেছিলেন কে তার প্রেমিকার জীবনে ছায়া ফেলেছে।তিনি মমতাকে আটকানোর চেষ্টা করেননি। মমতাও নতুন প্রেমের আহ্বানে সাড়া দিতে ফোনের রিসিভার নামিয়ে রেখেছিলেন।

মিঠুন চক্রবর্তী তখন বলিউডে পা রাখতে শুরু করেছেন। একদিন তিনি মমতার কাছে কলকাতায় আসেন উত্তরটা জানতে। সেদিন মমতাশংকর নিজের বাড়িতে বসেই জানিয়ে দেন তিনিও ভালোবেসে ফেলেছেন মিঠুনকে। দুজনের প্রেমের তরী নতুন হাওয়ার ধাক্কায় এগিয়ে চলে আরও খানিকটা পথ। মমতাশংকর মিঠুনকে বিয়ে করে ফেলতে চান। মিঠুনও রাজি। কিন্তু মাঝে একটা শর্তের ছেদ চিহ্ন বসালেন তিনি।বিয়ে হবে কিন্তু তারপর মমতা আর অভিনয় করতে পারবেন না। এখানে এসে ধাক্কা খেলেন মমতা। ততদিনে সারিকার সঙ্গে মুম্বাইতে এক প্রেমকাণ্ডে জড়িয়ে গেছেন মিঠুন। পত্রপত্রিকায় খবর ছাপা হয়ে গেলো। এ নিয়ে মমতার প্রশ্নের মুখে মিঠুন সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছিলেন।কিন্তু এই ঘটনার পর মমতা নিজেই মিঠুনের কাছে তাদের বিয়ের কথা জানতে চাইলে যেন অন্য সুরে অচেনা গান বেজে উঠলো। মিঠুন সময় নিতে চান আরও কিছুদিন।ক্যারিয়ারের সূচনালগ্নেই হয়তো মিঠুন বিয়েতে জড়িয়ে যেতে চাইছিলেন না। এক পর্যায়ে মমতা তার কাছে উত্তর শুনতে চাইলে মিঠুন জানিয়েছিলেন-আমি তোকে পরে জানাবো।যা বোঝার বুঝে গিয়েছিলেন সেদিন মমতা। কিন্তু মিঠুনকে দোষারোপ করেননি কখনোই। তখন মিঠুনের সামনে অপেক্ষা করছে  ক্যারিয়ার আর প্রতিষ্ঠার লড়াই।মমতা মিঠুনের আচরণের মানেটা অনুবাদ করে নিয়ে নিজে থেকেই নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়লেন। তবে আচমকা হাওয়ায় ঘূর্ণী তোলা ভালোবাসার আন্দোলন তাদের মাঝে ফুরিয়ে গেলো। দু‘জনের অভিবাবকরা এই বিয়েতে রাজি থাকলেও পাত্র-পাত্রীর নীরবতায় আলো নিভলো মিঠুন-মমতার প্রেমের। ধীরে ধীরে তৈরি হলো নীরবতার পাহাড়। মমতা আবার ফিরে গেলেন চন্দ্রোদয়ের কাছে।চন্দ্রোদয় তাকে গ্রহণ করলেন ভালোবেসেই। দুই তারকার প্রেমের গল্প ফুরালো এভাবেই।তবে এখনও মিঠুন আর মমতা দু’জনে দু’জনের বন্ধু হয়েই আছেন।

তথ্যসূত্রঃ ইউটিউব

ছবিঃ গুগল      

মন্তব্য করুন

Share Article

আরো পড়ুন

আরো পড়ুন

স্বত্ব © ২০১৬ - ২০২৩ প্রাণের বাংলা।

সম্পাদক ও প্রকাশক: আবিদা নাসরীন কলি।

Email: Article: [email protected], Avertising: [email protected]

Phone: +8801818189677, +8801717256199