ঋত্বিক ও মহেশ নাটকের গরু

প্রাণের বাংলা ডেস্ক

এডমিন ডেস্ক, ঢাকা থেকে

প্রকাশ: 7 Apr 2024

2160 বার পড়া হয়েছে

Shoes

বাংলাদেশের আদি বিক্রমপুরে ঋত্বিক ঘটকের বাড়ি উল্লেখ করা হলেও তার জীবনের শুরুর সময়টা কেটেছে রাজশাহী শহরে। রাজশাহীতে স্কুলে পড়ার সময় একবার ঋত্বিক ঠিক করলেন বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘মহেশ’ গল্পের নাট্যরূপ দেবেন এবং মঞ্চস্থ করবেন। ভাবনা মাথায় এলে সেটা সঙ্গে সঙ্গে কার্যকর করে ফেলা ছিলো ঋত্বিকের স্বভাব। নিজেই নাটকের স্ক্রিপ্ট তৈরি করে শুরু করে দিলেন রিহার্সেল। নাটক প্রস্তুত। নাটকের মূল চরিত্র মহেশ হিসাবে ঋত্বিক ঘটক শহরের ঘোষ পাড়া থেকে একটি গরু এনে মঞ্চে তুললেন। গরু বেঁধে রাখা হলো এক পাশে। জেলার ডিসিকে আমন্ত্রণ জানানো হলো প্রধান অতিথি হিসাবে।স্কুলের সব শিক্ষকরাও উপস্থিত দর্শক সারিতে নাটক দেখার জন্য। কিন্তু ঝামেলা বাধালো সেই গরু। মঞ্চে ঝলমলে আলোর ঝলকানি দেখে গরু ভীষণ ভয় পেয়ে উচ্চস্বরে ডাকাডাকি শুরু করে দিলো। এক পর্যায়ে নাটকের মাঝ পথে দড়ি ছিঁড়ে গরু লাফিয়ে পড়লো দর্শক সারির সামনে। হয়তো সে এত মানুষের ভিড় থেকে পালানোর পথ খুঁজছিলো। কিন্তু সেই উত্তেজিত গরুর উপস্থিতি শহরের সম্মানিত ব্যক্তিদের ফেলে দিলো বিব্রতকর অবস্থায়। লাফিয়ে ঝাঁপিয়ে সেই গরুও তখন দর্শক সারিতে তৈরি করলো উত্তেজনা। ভয় পেয়ে অনেকে নাটক দেখা বাদ দিয়ে পালিয়ে গেলেন।

আর পরিচালক ঋত্বিক ঘটক কী করলেন তখন? তিনিও নাটকের নির্দেশনা ফেলে চম্পট দিলেন।বেশ কিছুদিন সেই বিব্রতকর অবস্থার স্মৃতি ভুলতে ঋত্বিক ঘটককে স্কুলের দরজায় দেখা যায়নি।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলার সময় ঋত্বিক ঘটক কলকাতার রাস্তায় বৃষ্টি আর রোদ উপেক্ষা করে ঘুরে ঘুরে অর্থ সংগ্রহ করতেন। সেই অর্থ নিয়ে নিজেই আবার চলে যেতেন শরণার্থী শিবিরে পৌঁছে দিতে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ‘তিতাশ একটি নদীর নাম’ চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছিলেন হয়তো নিজস্ব ভূমির প্রতি ঋণ শোধের তাড়না থেকে। সেই সময়ে প্লেনে করে ঢাকায় আসার সময় তার সঙ্গী হয়েছিলেন সত্যজিৎ রায়। প্লেনের জানালা দিয়ে পদ্মা নদী দেখে হাউমাউ করে কেঁদে উঠে তিনি সত্যজিৎ রায়কে বলেছিলেন, ‘সে বাংলাদেশ আপনারা দেখেননি, সেই প্রাচুর্যময় জীবন, সেই সুন্দরের আহ্বান। আমি যেন সেই জীবনের পথে চলেছি।’

তথ্যসূত্রঃ বঙ্গ দর্শন, কলকাতা

ছবিঃ গুগল

মন্তব্য করুন

Share Article

আরো পড়ুন

আরো পড়ুন

স্বত্ব © ২০১৬ - ২০২৩ প্রাণের বাংলা।

সম্পাদক ও প্রকাশক: আবিদা নাসরীন কলি।

Email: Article: [email protected], Avertising: [email protected]

Phone: +8801818189677, +8801717256199